সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে নির্মাণাধীন একটি সড়কে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এই সড়কটির জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ১২ হাজার ৮৪ টাকা। অথচ নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তার দুই পাশে ধস নামছে, খোয়া ভেঙে যাচ্ছে হাতের আঘাতে, এবং বৃষ্টিতে ধুয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটির উঁচু করার কথা থাকলেও দেড় ফুট কম উঁচু করা হয়েছে। রাস্তার পাশে কোনো মাটি ভরাট করা হয়নি, বরং নিচ থেকে মাটি কেটে তা উপরে ফেলা হয়েছে। ব্যবহার করা খোয়া এতটাই নি¤œমানের যে হাত দিয়েই ভেঙে যাচ্ছে। রাস্তার এক পাশে দেওয়া ব্লকে ইতোমধ্যেই ফাটল ধরেছে। কাজের নি¤œমান সম্পর্কে অবহিত করলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উল্টো ঠিকাদারদের পক্ষেই সাফাই গেয়ে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আওতায় ‘সিরাজগঞ্জ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কায়েমপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর থেকে পাড়মনোহারা পর্যন্ত ৭৫০ মিটার সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ কোটি ৬৯ লাখ ১২ হাজার ৮৪ টাকা। চুক্তি মূল্য ছিল ১ কোটি ৬০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯ টাকা। কাজটি পায় মেসার্স নুর এন্টারপ্রাইজ, যারা পরে কাজটি রেজাউল করিম লিটন নামক অপর এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেয়।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, সাব-বেস ও ডব্লিউবিএম তৈরিতে নি¤œমানের পোড়া মাটির মতো খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। অল্প কয়েকটি জায়গায় প্রাইমকোট দেওয়া হলেও তা সামান্য বৃষ্টিতেই ধুয়ে গেছে। ব্রিজ সংযোগস্থলে নির্ধারিত নিয়ম না মেনে ব্রিজের মধ্য থেকে ৯০ ডিগ্রি কোণে রাস্তা বাঁকানো হয়েছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। রাস্তার পাশে দেওয়া ব্লকে দেখা দিয়েছে ফাটল।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের, বাহাদুর আলী, শাহাদৎ হোসেন, মমতাজ আলী ও রফিকুল ইসলামসহ অনেকে জানান, ‘রাস্তার দুই পাশে মাটি দেওয়া হয়নি, বরং নিচ থেকে মাটি তুলে উপরে ফেলা হয়েছে। এতে রাস্তায় জায়গায় জায়গায় দেবে গেছে। খোয়া একদম ভঙ্গুর, হাত দিয়েই ভেঙে যাচ্ছে। বারবার অভিযোগ করলেও কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, বরং ঠিকাদারের পক্ষেই কথা বলেন।’
উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী আহমেদ আল মামুন সাংবাদিকের প্রশ্নে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, তিনি কাজের বিষয়ে কিছুই জানেন না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী এএইচএম কামরুল হাসান রনী বলেন, কাজ সঠিকভাবে না করলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান করা হবে না। কাজের চুক্তি মোতাবেক কাজ না হলে এবং কাজে অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।