বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফর শেষ হওয়ার আগেই পাকিস্তান সিরিজের দামামা বাজছে। আগামী ২০, ২২ ও ২৪ জুলাই মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজের আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশ নিয়েছেন লিটন কুমার দাসরা। তবে তাদের সিরিজের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হেরে হতাশায় পুড়তে হয়েছে দলকে।
ঘরের মাঠে খেলা হলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে বাড়তি চ্যালেঞ্জ থাকবে বাংলাদেশের জন্য। এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে পাকিস্তান বেশ ভালো দল। এ পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে ২২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে মাত্র তিনটিতে জিতেছে টাইগাররা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের অক্টোবরে এশিয়ান গেমসে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এর আগে দুটি জয় মিরপুরের মাঠে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জিতেছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এই তিন ম্যাচ ছাড়া বাকি ১৯টি ম্যাচেই পাকিস্তানের কাছে হারের রেকর্ড বাংলাদেশের। সর্বশেষ গত মে-জুনে পাকিস্তান সফরে গিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে লড়াই-ই জমিয়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটয়াশ হয়েছে তারা। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের দুঃস্মৃতি রয়েছে তাদের। বর্তমানে যে ট্রানজিশন পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট, টানা সিরিজ হারের কারণে ঘরের মাঠেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। যদিও সিনিয়র বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে ছাড়া বাংলাদেশ সফরে আসছে পাকিস্তান। তাদের ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত দলে রাখা হয়নি বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শাহিন শাহ আফ্রিদিকে। ইনজুরির কারণে দলে নেই পেসার নাসিম শাহ। তা ছাড়া শাদাব খান ও হারিস রউফও চোটে পড়ায় বাংলাদেশ সফরের দলে নেই। সালমান আগার নেতৃত্বাধীন তারুণ্যদীপ্ত দল খেলবে পাকিস্তানের। ফখর জামান, ফাহিম আশরাফ, সাইম আইয়ুব, খুশদিল শাহরা বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন। তাদের অনেক ক্রিকেটারেরই বিপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশের কন্ডিশন, উইকেট সম্পর্কে পাকিস্তানিদের স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে। তা ছাড়া বাংলাদেশের দুর্বলতার জায়গাগুলোও তাদের ভালো করে জানা। সব মিলে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের সামনে পাকিস্তান শক্ত প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে, তাতে সন্দেহ নেই।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বোলিং কিংবা ব্যাটিং বিভাগে দুই-একজন ক্রিকেটার ভালো কিছু করে দেখাতে পারলেই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রত্যাশিত পাওয়ার ব্যাটিং শো করতে পারছে না বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে কিংবা মাঝের ওভারগুলোয় স্কোর বোর্ডে যেভাবে রান ওঠার কথা, সেটি দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে কিছু নৈপুণ্য দেখা গেলেও তা ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। বোলিংয়েও হতাশার গল্প। স্পিন কিংবা পেসÑ কোনো বিভাগেই প্রতিপক্ষে ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেওয়ার মতো বিধ্বংসী বোলিংয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ ও তরুণ যারা আছেন, তারা মাঝেমধ্যে জ¦লে উঠলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভালো সমাপ্তি এনে দিতে পারেন না। ফলে টানা সিরিজে হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে এবার ঘরের মাঠে কী পারফরম্যান্স দেখায় টাইগাররা, তা ভাবনার বিষয়। সর্বশেষ ২০২১ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি খেলেছে পাকিস্তান। সেবার সিরিজের প্রতিটি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। চার বছর পর আবার ঘরের মাঠে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এবার অতীত সিরিজ হারের বদলা নেবে, নাকি সেই হারের বৃত্তে হাবুডুবু খাবে বাংলাদেশ, তা দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
আপনার মতামত লিখুন :