ঢাকা সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

*উইম্বলডনের নতুন রানি শিয়ানটেকের শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাস

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ০১:১২ এএম

জীবনে প্রথমবারের মতো উইম্বলডনের শিরোপা জিতলেন ইগা শিয়ানটেক। নারী এককের ফাইনালে আমান্ডা আনিসিমোভাকে সরাসরি সেটে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাস করেছেন এই পোলিশ সুন্দরী। শিরোপা জয়ের পর শিয়ানটেক বলেছেন, এভাবে যে চ্যাম্পিয়ন হবেন, সেটি কল্পনায়ও ছিল না। ফাইনালে শিরোপার লড়াইকে একপেশে বানিয়ে ফেলে যেন নিজের কাছে বিশ্বাসই হচ্ছে না অষ্টম বাছাই হিসেবে আসর শুরু করা শিয়ানটেকের। তিনি বলেন, ‘খুবই পরাবাস্তব অনুভূতি হচ্ছে। এমনকি আমি এর স্বপ্নও দেখিনি, আমার কাছে এটা বাস্তবতার থেকে অনেক দূরের কিছু। আগের গ্র্যান্ড স্লামগুলো জিতে আমার নিজেকে একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় বলেই মনে হতো, কিন্তু তার পরও এমন (এভাবে জয়ের) কিছুর প্রত্যাশা কখনো করিনি।’
বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের মাঝে বয়সে এক বছরের ছোট প্রতিপক্ষকে অভিনন্দন জানাতেও ভুল করেননি শিয়ানটেক। তিনি বলেন, ‘প্রথমত, চমৎকার এ দুই সপ্তাহ সে যেভাবে খেলেছে, এর জন্য আমি অ্যামান্ডাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। তুমি যেভাবে কাজ করছ, তাতে তোমার গর্বিত হওয়া উচিত এবং আমি আশা করি, আমরা আরও অনেক ফাইনাল খেলব।’ 
ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠেন শিয়ানটেক ও আনিসিমোভা। শিয়ানটেকের ভান্ডারে ছিল পাঁচটি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের অভিজ্ঞতা। আর আসরের চমক ছিলেন আনিসিমোভা। কিন্তু শিরোপার মঞ্চে এসে নতুন কোনো বিস্ময় উপহার দিতে পারলেন না তিনি। দাপুটে পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হলেন শিয়ানটেক। সেন্টার কোর্টে ফাইনালে ৬-০ ও ৬-০ গেমে জিতেছেন পোলিশ তারকা। টানা ১৮ গেম জিতে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন শিয়ানটেক। গড়লেন পোল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডন জয়ের অনন্য কীর্তি। গ্র্যান্ড স্লামে এটি তার শততম জয়, ১২০ ম্যাচে। ২০১৯ সালে বাবাকে হারিয়ে, যিনি তার কোচও ছেলেন, ভেঙে পড়েছিলেন আনিসিমোভা। থমকে গিয়েছিল তার ক্যারিয়ার। ২০২৩ সালে আবার মানসিক অবসাদের কারণে টেনিস থেকে লম্বা বিরতি নেন তিনি। তাতে ডব্লিউটিএ র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়েন ৪০০-এর বাইরে। গত বছর কোর্টে ফেরার পর চলতি আসর শুরু করেন ১৩তম বাছাই হিসেবে। কোর্টে নেমে একের পর এক চমক দেখিয়ে, সেমিফাইনালে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ খেলোয়াড় আরিনা সাবালেঙ্কাকে হারিয়ে উঠে আসেন শিরোপার লড়াইয়ে। এখানে যদিও তাকে কোনো লড়াইয়ের সুযোগই দিলেন না শিয়ানটেক। মাত্র ৫৭ মিনিটেই উড়িয়ে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষকে। এমন অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে টেনিসের ময়দানে ৩৭ বছরের পুরোনো এক স্মৃতিও ফেরালেন ২৪ বছর বয়সি শিয়ানটেক। টেনিসের উন্মুক্ত যুগে গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে এ নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার দেখা গেল ৬-০ ও ৬-০ স্কোরলাইন। ১৯৮৮ সালের ফরাসি ওপেনের ফাইনালে বেলারুশের নাতাশা জেভেরেভাকে এভাবেই হারিয়েছিলেন ২২টি গ্র্যান্ড স্লাম বিজয়ী জার্মান গ্রেট স্টেফি গ্রাফ। সেদিন তিনি জিতেছিলেন মাত্র ৩৪ মিনিটে। ‘ফাইনালে কখনো হারেন না’ অসামান্য এই ধারাবাহিকতাও ধরে রাখলেন শিয়ানটেক। ছয়বার গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে উঠে জিতলেন প্রতিবার; এর আগে তিনি জিতেছেন চারবার ফরাসি ওপেনে ও একবার ইউএস ওপেনে।