অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেল। তার বিদায়ি ম্যাচটি জয়ে রাঙিয়ে দিতে পারল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে ক্যারিবিয়ানরা। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
জ্যামাইকায় বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে তোলে ১৭৩ রান। শুরুতে ব্র্যান্ডন কিং ফিফটি করলেও সুবিধা করতে পারেননি আর কেউ। শেষ দিকে ৪ ছক্কায় ১৫ বলে ৩৬ রান করেন রাসেল। বিদায়ি ম্যাচে রাসেল ঝোড়ো ইনিংস খেললেও জিততে পারল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জশ ইংলিসের বিধ্বংসী ব্যাটিং আর ক্যামেরন গ্রিনের সঙ্গে রেকর্ড জুটিতে ২৮ বল বাকি থাকতে বড় জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
বিদায়ি ম্যাচে রাসেলকে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়েছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। মাঠে তখন দুপাশে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে তারা। দর্শকদের তুমুল করতালির মধ্যে হাসিমুখে হাত তুলে এগিয়ে গেলেন রাসেল। অপেক্ষায় ছিলেন জ্যামাইকার ক্রীড়া, বিনোদন ও সংস্কৃতিমন্ত্রী অলিভিয়া গ্রেঞ্জ। সেখানে রাখা ছিল জ্যামাইকার পতাকায় মোড়ানো স্মারক।
রাসেলকে নিয়ে সেই স্মারকের পর্দা তুললেন মন্ত্রী। ফ্রেমে বাঁধাই করা ক্রিকেট ব্যাট ও বল, যেটি মূলত একটি গিটার! ধারাভাষ্যকার বললেন, ‘রেগে সংগীতের ছন্দ আর ক্রিকেটের হৃৎস্পন্দন মিশে আছে একাকার হয়ে।’ ঘরের মাঠ থেকে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন রাসেল। জ্যামাইকা তাকে সেই সম্মান ও ভালোবাসা উপহার দিল।
ক্যারিবিয়ান নায়কের বিদায়ি অর্ঘ্য ছিল ওই স্মারক আর নানা আয়োজন। পরে ব্যাট হাতে ২২ গজে নেমে তিনি ঝংকার তুললেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে শেষবারের মতো। কিন্তু দুটি বিশ্বকাপজয়ী তারকার শেষটা রাঙানো হলো না জয়ে। স্পিনারদের দারুণ বোলিংয়ের পর জশ ইংলিসের বিধ্বংসী ইনিংস ও ক্যামেরন গ্রিনের সঙ্গে রেকর্ড জুটিতে অনায়াসে জিতে গেল অস্ট্রেলিয়া। ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ৩৩ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করেন ইংলিস, আগের ম্যাচে ফিফটি করা ক্যামেরন গ্রিন অপরাজিত থাকেন ৩২ বলে ৫৬ রান করে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ১৩১ রান, তৃতীয় উইকেটে যা অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল ২০১৪ সালে অ্যারন ফিঞ্চ ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল জুটির ১১৮।
সেই ম্যাক্সওয়েল এখন ঠিক প্রত্যাশিত ছন্দে নেই। এই ম্যাচে তাকে পাঠানো হয় ইনিংস শুরু করতে। প্রথম ওভারে আকিল হোসেনকে টানা দুই বলে চার ও ছক্কা মারলেও আউট হয়ে যান তিনি পরের ওভারেই। পাওয়ার প্লের মধ্যে বিদায় নেন অধিনায়ক মিচেল মার্শও (১৭ বলে ২১)। তবে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশা পিষ্ট করেন ইংলিস ও গ্রিন।
দুজনের চার-ছক্কার স্রোতে ভেসে যায় ক্যারিবিয়ান বোলিং। ছয়-ছয়টি ক্যাচ ছেড়ে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনেন ক্যারিবিয়ানরা। স্বয়ং রাসেল নিতে পারেননি দুটি ক্যাচ। স্যাবাইনা পার্কে ম্যাচের প্রথম ভাগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ উদ্বোধনী জুটিতে তোলে ৬৩ রান। তবে সেই জুটি ছিল অদ্ভুত। ৪ ছক্কায় ৩৬ বলে ৫১ রান করে ব্র্যান্ডন কিং আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তার সঙ্গী অধিনায়ক শেই হোপের রান কেবল ১৩ বলে ৯! অ্যাডাম জ্যাম্পা ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের স্পিনে ভেঙে পড়ে ক্যারিবিয়ান মিডল অর্ডার। ৬ ওভারে ৩৫ রানের মধ্যে পতন হয় ৫ উইকেটের। এরপর রাসেলের ওই ক্যামিওতে কিছুটা প্রাণ ফেরে ইনিংসে। শেষ দিকে গুডাকেশ মোটির ৯ বলে ১৮ রানে ১৭০ ছাড়ায় দল।
আপনার মতামত লিখুন :