বর্তমান ক্রিকেট বিশে^র সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি। এর মধ্যে একটি উদ্যোগ হলো ‘শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’। গত মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ‘ শেয়ার অ্যান্ড কেয়ার’ নামে বৈঠক করেছেন বিসিবি সভাপতি ও পরিচালকেরা। এমন আয়োজনে হাজির ছিলেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমও। বিসিবির এই আয়োজন ভালো উদ্যোগ বলে মনে করেন এই উইকেটরক্ষক ও ব্যাটার। তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশ^াসী মুশফিক।
বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে গতকাল ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটারদের ট্রায়ালে অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মুশফিক। সেখানে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘বাস্তবায়ন যত দিন না হবে, এসব বৈঠক ফলপ্রসূ হবে না। আমরা তো ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ দিকে, আশা করব পরের প্রজন্মের জন্য এ রকম পরিবেশ যেন দিতে পারি, যাতে তারা নিয়মিত সব জায়গায় গিয়ে খেলতে পারে। ও রকম মাঠ যেন করে দিয়ে যেতে পারি, অনুশীলনের সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি।’ বিশ^ ক্রিকেটের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্যও সামনে নিয়ে আসেন জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিক। তিনি বলেন, ‘বিশ^ ক্রিকেট যত দূর এগিয়ে গেছে, বাংলাদেশ তাদের থেকে অনেক পিছিয়ে। এদিক থেকে যদি আমরা সেই সাপোর্টটা দিতে পারি, তাহলে আরও এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট।’
বিসিবির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ক্রিকেটাররা সামনে এনেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের সুযোগ-সুবিধাকেও। বিশেষত উইকেটের সমস্যার কথা সামনে এনেছেন তারা। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মাঠে গড়াবে জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি, এরপর জাতীয় লিগের চার দিনের আসরও হবে। আসন্ন টুর্নামেন্টে খেলবেন কি না? মুশফিক বলেন, ‘যদি কোনো দল নেয়, জাতীয় লিগে খেলার ইচ্ছে আছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সব দিক দিয়ে চেষ্টা করছি, এখন দেখা যাক।’ বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কের সুযোগ-সুবিধা দেখে মুগ্ধ মুশফিক।
তার মতে, দেশের ক্রিকেটের নীতিনির্ধারকদের এমন উন্নত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা উচিত। বিশেষভাবে সক্ষম ক্রিকেটারদের ব্যাট-বলের লড়াই দেখতে যাওয়ার পথে বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কের সুবিধাদি কিছুটা দেখেন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘এটা (বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্ক) দেখে আমাদের সবারই লজ্জা লাগা উচিত। কারণ এরকম একটা গ্রুপ বাংলাদেশে... ক্রিকেট তো দূরের কথা, (বাংলাদেশের) কোনো জাতীয় দলেরই এরকম সুবিধা নেই, যেটা কিনা খুবই মৌলিক সুবিধা হওয়া উচিত। কারণ আপনি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে ক্রিকেটার বের করে আনা কঠিন।’ বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কে এখন ৫টি সেন্টার উইকেট, ১২টি টার্ফ পিচ রয়েছে। অত্যাধুনিক ইনডোর ফ্যাসিলিটির ভেতরে রয়েছে ৭ লেন ইনডোর অ্যাস্ট্রো টার্ফ, উন্নত বোলিং মেশিনের পাশাপাশি ভিডিও অ্যানালাইসিস করার সুবিধা।
এ ছাড়া উন্নত জিম, সুইমিং পুল ও আইস বাথের ব্যবস্থাও আছে এতে। মুশফিকের আশা, বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্ক দেখে অনুপ্রাণিত হবেন অন্যরা এবং গড়ে তুলবেন একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা, যাতে করে উপকৃত হতে পারেন দেশের ক্রিকেটাররা। মুশফিক বলেন, ‘এই সুযোগ-সুবিধা দেখে আমাদের নীতিনির্ধারকেরা যদি উজ্জীবিত না হন, তাহলে আফসোস করা ছাড়া আর কিছু বলার নেই।
তবে এটা অবশ্যই প্রেরণাদায়ী একটা জিনিস। একটু দেরি হলেও ওনাদের (বসুন্ধরা) মতো এত বড় একটা গ্রুপ এই কাজটা করেছে। আশা করি, এখান থেকে অনেক ক্রিকেটার উপকৃত হবে, অনেক মানুষ উপকৃত হবে এবং এটা দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হবে।’ খেলাধুলার উন্নতির ক্ষেত্রে বসুন্ধরার সার্বিক চেষ্টার প্রশংসা করেন মুশফিক। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ধাপে তারা (বসুন্ধরা) নিজেদের উন্নতি করছে। শেখ জামালে এক বছর খেলেছি, চ্যাম্পিয়নও হয়েছি।
তো ইশতিয়াক (সাদেক) ভাইকে খুব কাছ থেকে চিনি। অন্য যারা আছে, তাদেরও চিনি। যেভাবে দিনে দিনে সুবিধা বাড়ছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছু হবে। আন্তর্জাতিক ভেন্যু হলে আমাদের ক্রিকেটাররা এখানে এসে সর্বোচ্চ সুবিধায় অনুশীলন করতে পারবে।’