আগামী ৬ অক্টোরব বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে নির্বাচনি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই ভোটার তালিকা প্রকাশের মাধ্যমেই বিতর্কের শুরু। এরপর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আপত্তিও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যার ফলে বিসিবি নির্বাচন ঘিরে প্রশ্ন, বিতর্ক ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে কাউন্সিলরের তালিকায় নাম আসেনি বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠুর। ভাইকিংস ক্রিকেট একাডেমির কাউন্সিলর হিসেবে বিসিবির খসড়া ভোটার তালিকায় জায়গা পাননি তিনি।
মিঠুর বক্তব্য, ‘বিসিবিই তো নির্বাচন কমিশনকে নিয়োগ দিয়েছে। তারা নিজে থেকেই বোর্ডের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল, অথচ বোর্ড কিছু বলছে না। আপনার কি মনে হয়, বোর্ডের কোনো ইন্ধনে বা বোর্ডের কারও নির্দেশনাতেই তারা এরকম করছে?’ অন্যদিকে, নাখালপাড়া ক্রিকেটার্সের কাউন্সিলর লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার দাবি, কাউন্সিলর আপত্তি গ্রহণের প্রক্রিয়াটাই ঠিক নেই। গত বুধবার ৩০টির মতো আপত্তি জমা হয়। অথচ নির্বাচন সম্পর্কিত তথ্য অফিসিয়ালি নির্বাচন কমিশন জানায়নি। অবশ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে গত ৬ সেপ্টেম্বর। শুরুতেই তফসিল ঘোষণায় বরখেলাপ করা হয়েছে। সংশোধিত তফসিল প্রকাশ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। এতে অনেক প্রশ্ন ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিসিবিতে নির্বাচন কমিশনের অফিসে তথ্য সংগ্রহের জন্য নিয়ে প্রবল বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন সংবাদকর্মীরা।
বিসিবি নির্বাচনের ইতিহাসে এমন নজিরবিহীন কা- আগে ঘটেনি। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের তপশিলের নির্ধারিত সময়ের ২৪ ঘণ্টা পর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়, যেখানে নাম নেই ছয়টি জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ১৫টি ক্লাবের প্রতিনিধির। দুর্নীতির অভিযোগে যে ১৮টি ক্লাবের বিরুদ্ধে তদন্ত দলছে, সেগুলোর মধ্যেই আছে বাদ পড়া এই ১৫ ক্লাব। যদিও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তাধীন এবং বিসিবির পক্ষ থেকে বেশ কিছুদিন ধরেই বলা হচ্ছিল, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই ক্লাবগুলোর প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সভায়ও এটি অনুমোদিত হয় ও নির্বাচন কমিশনকে তা জানানো হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন নিজেদের সিদ্ধান্তে সেই ১৫ ক্লাবকে খসড়া তালিকার বাইরে রাখে।
এবারের বিসিবি নির্বাচন ঘিরে যা হচ্ছে, তা আগে কখনো দেখেননি ক্রীড়া সংগঠকেরা। আপত্তি ঘিরেও রহস্য তৈরি হয়েছে। কানাডা-প্রবাসী সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জমা পড়েছে, যেখানে আপত্তি জানানো হয়েছে ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কাউন্সিলর ও সাবেক জাতীয় অধিনায়ক তামিম ইকবালের বিরুদ্ধে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, আইসিসি স্বীকৃত ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর না নেওয়ায় বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তামিম কাউন্সিলর হতে পারেন না। অথচ তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বেশ আগেই এবং সম্প্রতি বলেছেন, বিসিবি নির্বাচন করলে স্বীকৃত ক্রিকেটে তিনি আর খেলবেন না। মজার বিষয় হলো, স্বয়ং বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে খেলা থেকে অবসর নেননি।