সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচেই ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য নাগালের মধ্যে পেয়েও জিততে পারেনি তারা। আবার প্রতিপক্ষকে বড় টার্গেটও ছুঁড়ে দিতে পারেনি স্বাগতিকরা। একমাত্র তানজিদ হাসান তামিম ছাড়া সিরিজে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন দলের অন্য সব ব্যাটসম্যানরা। সর্বশেষ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে অসহায়ভাবে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন কুমার দাস বলেছেন, টানা সিরিজ খেলতে খেলতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ব্যাটসম্যানরা। যে কারণে ব্যাটিংয়ে ছন্দ নেই। এজন্য একটা বিরতি চান তারা। ক্যারিবীয়দের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়াটাকে স্বাভাবিক ভাবেই নিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন।
যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল নেপালের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরে বাংলাদেশ সফরে এসেছে, সেই দলটিই কি না ঘরের মাটিতে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল। লিটন বলেন, ‘এখানকার খেলোয়াড়েরা নিজেদের প্রমাণ করেছে। তারা জাতীয় দলে অনেক দিন ধরে খেলছে। একটা সিরিজ বাজে যেতে পারে। তবে যেই খেলোয়াড়েরা খেলেছে, সবাই নিজেদের প্রমাণ করেছে। দুয়েকজন সব সময় ভালো করে। আমার মনে হয় বিরতিটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, তারা একটু ক্লান্ত আছে। বিরতির পরে আবার তারা চাঙা হয়ে আসবে এবং ভালো মতোই খেলবে।’
গত অক্টোবরের শুরুতে এশিয়া কাপের আগে এক মাসের ক্যাম্প করেছিল বাংলাদেশ। এরপর এশিয়া কাপ খেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দেশে না ফিরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে তারা। আমিরাতে দেড় মাসের লম্বা সফর শেষে দেশে ফেরার তিন দিনের মধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নামেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। টানা খেলার ধকলের কথাই বললেন লিটন। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ক্রিকেটাররা অনেক ক্রিকেট খেলে ফেলে এবং অবসাদ চলে আসে। আপনি অনেক কিছু চেষ্টা করেন দেওয়ার জন্য। কিন্তু অনুকূলে থাকে না কোনো কোনো সময়। এই একটা সিরিজ তেমন হতে পারে। অনেক দিন ধরে ক্রিকেট খেলছে সবাই।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শেষ হলেও খুব বড় বিরতি পাচ্ছেন না লিটনরা। কেননা আগামী ১১ নভেম্বর থেকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। আইরিশদের বিপক্ষে হবে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টিও। এই সিরিজ শেষে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে বিপিএল শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ খেলবে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ। আয়ারল্যান্ড সিরিজের আগে দিন দশেকের বিরতিটা ক্রিকেটাররা সতেজ হতে কাজে লাগাবেন বলে বিশ^াস লিটনের। তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়দেরও বিরতি দরকার। কারণ, আপনি যখন নিয়মিত ভিত্তিতে ক্রিকেট খেলবেন, অনেক কিছু আপনার অনুকূলে যাবে না। এখন অন্তত ১০ দিনের মতো বিরতি পাবে, নিজেকে রিস্টার্ট করার জন্য। পরে আবার আয়ারল্যান্ড সিরিজ আছে। তার আগে অনুশীলন করবে। আমার মনে হয়, খেলোয়াড়েরা সবাই ভালোমতো রিকভার করে আবার ফিরবে।’ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বারবার যে বিরতির কথা বলছেন লিটন, তাতে কী মিলবে ব্যাটিং ব্যর্থতার সমাধান? বিরতি পেলে ক্রিকেটাররা আরও প্রাণবন্ত হয়ে খেলায় ফিরছেন। এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের যে টেকনিক্যাল ও মানসিকতাÑ সেটি কী করে কাটিয়ে উঠবেন তারা? অনেকেই ফর্মে নেই। আবার তাদের নানা ধরনের দুর্বলতা ফুটে উঠছে। তাতে তাদের ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেটও অনেক হতাশাজনক। ডট বল খেলা হচ্ছে বেশি। মাঝের ওভারগুলোও দক্ষতা দেখাতে পারছেন না ব্যাটসম্যানরা। সব মিলে ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাংলাদেশ। সামনের সিরিজে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না লাল-সবুজের জার্সিধারীরা, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

