শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মিনহাজুর রহমান নয়ন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:২০ এএম

পাহাড়ি রাণীকে দেখতে

মিনহাজুর রহমান নয়ন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:২০ এএম

পাহাড়ি রাণীকে দেখতে

গহীন প্রকৃতির মাঝে সবার মধ্যমণি হয়ে বাস করেন এক রাণী। সবার থেকে আলাদা, সবার থেকে বড়, সবার থেকে সুন্দরী এই রাণীর নাম খৈয়াছড়া ঝরনা। বাংলাদেশের অন্যান্য ঝরনাগুলো থেকে আলাদা হওয়ায় ভ্রমণপ্রেমীরা আদর করে একে ‘ঝরনা রাণী’ বলে ডাকে। আর ডাকবে না বা-ই কেন? খৈয়াছড়ার রূপ আর আভিজাত্যের ধারেকাছেও নেই অন্য কোনো ঝরনা।

খৈয়াছড়া ঝরনা চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। বড় তাকিয়া বাজার থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার ভেতরে গেলে এর দেখা পাওয়া যাবে। বড় তাকিয়া বাজার থেকে খৈয়াছড়া ট্রেইল পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার, বাকি আড়াই বা তিন কিলোমিটার পর্যন্ত খৈয়াছড়া ট্রেইল। খৈয়াছড়া ঝরনা মোট নয়টি ক্যাসকেড নিয়ে গঠিত। ট্রেইল ধরে সোজা এগিয়ে গেলে বড় এই ঝরনাটার দেখা পাওয়া যাবে। বাকি আটটি ঝরনা দর্শনে আপনাকে ঝরনাগুলোর পাশের পিচ্ছিল পাহাড় বেয়ে উঠে যেতে হবে উপরে। যার জন্য লাগবে সাহস, প্রবল উদ্যম আর জয় করার অদম্য ইচ্ছা।

খৈয়াছড়া ঝরনা বিখ্যাত এর ক্যাসকেডগুলোর চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যের কারণে। বড় তাকিয়া বাজার থেকে মূল ঝরনা পর্যন্ত জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হাঁটা পথ, যার অর্ধেকের বেশি ঝরনার পানি চলাচলের কারণে পিচ্ছিল এবং কর্দমাক্ত হয়ে থাকে। যেতে যেতে চোখে পড়বে পাহাড়ি আদিবাসি এবং ওই এলাকার বাসিন্দাদের ছোট ছোট ঘরগুলো। পথে দেখা মিলতে পারে দোকানপাটের। ভাগ্য ভালো হলে পেয়ে যেতে পারেন ছোট ছোট পাহাড়ি বানরের। ট্রেইল যেখানে শুর”, সেখান থেকে প্রায় দেড়ঘণ্টা হেঁটে গেলে প্রথম ঝরনাটার দেখা পাবেন। প্রথম ঝরনাটায় যাওয়া যেহেতু কম কষ্টসাধ্য, সেহেতু সেখানে প্রচুর পর্যটকের দেখা পাওয়াই স্বাভাবিক। ৯০ শতাংশ মানুষ সেখান থেকেই ফেরত চলে যান। কিন্তু ট্রেকিং প্রিয় পর্যটকরা? আপনি যদি মনস্থির করে ফেলেন আপনি উপরে উঠবেনই, তাহলে সেখান থেকেই আপনার অ্যাডভেঞ্চার শুরু।

প্রথম ঝরনা থেকে দ্বিতীয় ঝরনায় যাওয়ার জন্য পাহাড়ে কয়েকটা দড়ি বেঁধে দেওয়া আছে। দড়ি ধরে ধরে উপরে উঠবেন। কিন্তু সাবধান! পাহাড়ের ঢাল কিন্তু প্রচ- পিচ্ছিল। উপরে উঠতে খুবই সাবধান। দ্বিতীয় ঝরনা থেকে উপরে আর কোনো দড়ি নেই। পাহাড়ের খাঁজে পা রেখে বা পাহাড়ি গাছের লতা ধরে উঠে যেতে হবে উপরে। ঝরনার তৃতীয় ধাপটি অন্য ধাপগুলোর চেয়ে স্বতন্ত্র। এই ধাপ থেকে নিচের দুই ধাপের প্রবাহ দেখা যায়। এভাবে উপরে মোট নয়টি ধাপ পাবেন। মোট ৯টি ধাপের কয়েকটি ধাপে পাবেন নয়নাভিরাম ক্যাসকেডের। যেরকম বাংলাদেশের অন্য কোনো ঝরনায় এখনো দেখা যায়নি। নবম ধাপে পাবেন পানির স্রোতে তৈরি হওয়া একটি প্রাকৃতিক লেকের। একে খৈয়াছড়া লেক বলে অনেকে। এটাই খৈয়াছড়া ঝরনার পানির মূল উৎস।

এই হলো এক নজরে খৈয়াছড়া ঝরনা। আর আপনি যদি ক্যাম্পিং করতে ভালোবাসেন, তাহলে কোনো এক পূর্ণিমার দিন বেছে চলে যান খৈয়াছড়া। খাবারদাবার নিয়ে উঠে যান পাহাড়ের উপরে। সমতল জায়গায় তাঁবু বিছিয়ে উপভোগ করুন পূর্ণিমার চাঁদে রহস্যময়ীর রূপ ধারণ করা, ভয়ঙ্কর সুন্দরী রাণী খৈয়াছড়াকে।

যদি ঢাকা থেকে আসতে চান তাহলে ঢাকা-চট্টগ্রাম অথবা ঢাকা-ফেনীগামী কোনো রাতের বাসে উঠে পড়ুন। ভোরে ফেনী নেমে গেলে নাস্তা সেরে ফেনী থেকে চট্টগ্রাম যায় এমন বাসে উঠুন। হেল্পারকে বললে আপনাকে একেবারে খৈয়াছড়া রাস্তার মাথায় নামিয়ে দেবে। সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে বা হেঁটে হেঁটে চলে যেতে পারেন ট্রেইলের কাছে। চাইলে দুপুরের খাবার নিয়ে নিতে পারেন। কারণ সবগুলো ঝরনা ঘুরে দেখতে চাইলে নামতে নামতে সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে।

বড় তাকিয়া বাজারে থাকার হোটেল নেই। যদি রাত থাকতে চান তাহলে কাছের মিরসরাই পৌরসভায় বা ফেনী চলে যেতে পারেন। আর যদি থাকতে না চান তাহলে লেগুনা করে মিরসরাই চলে যান। সেখান থেকে ঢাকার বাস পেয়ে যাবেন।

খৈয়াছড়া ঝরনা খুবই দুর্গম ও বিপজ্জনক। উপরে উঠতে চাইলে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন কর”ন। সাপোর্টের জন্য একটি শক্ত মুলি বাঁশ নিয়ে নিন। ট্রেইল শুরু হওয়ার আগেই পেয়ে যাবেন বাঁশের দোকান। পিস ১০ টাকা করে নেবে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!