ঢাকার আশপাশে ডে ট্যুরের জন্য চমৎকার একটি স্থান কেরানীগঞ্জ এর সারিঘাট। ঢাকা শহরের যান্ত্রিকতা থেকে কিছুক্ষণের জন্য শান্ত মুডে থাকতে হতে পারে দারুণ জায়গা। কিছুটা প্রাকৃতিক ছোঁয়ার জন্য সারিঘাট থেকে ঘুরে আসা যায়। সবুজে ঘেরা মনোরম পরিবেশ, নদী, খোলা জায়গা, কাশবন আর সঙ্গে নৌকা ভ্রমণ। এখানকার নিরিবিলি শান্ত পরিবেশে একটা বিকেল অনায়াসেই কাটিয়ে দেওয়া যায়। সারিঘাট গিয়ে হারিয়ে যাবেন প্রকৃতির মাঝে। ঢাকায় যারা বসবাস করেন, তারা ঢাকার কাছাকাছি একটা দিন বেড়িয়ে আসার জন্য সারিঘাটকে বেছে নিতে পারেন।
সারিঘাট কীভাবে যাবেন
সারিঘাট এর নাম শুনলে প্রথমে আমাদের মাথায় আসবে নদীর ঘাটের কথা যেখানে সাড়ি সাড়ি নৌকা ভিড়ানো থাকবে, মানুষ এপার থেকে ওপার হতে পারে। ঢাকার কাছে কেরানীগঞ্জের সারিঘাট যাওয়ার জন্য ঢাকার যে কোনো জায়গা প্রথমে যাত্রাবাড়ী আসতে হবে। সেখান থেকে জুরাইন রেল গেট। বাস বা লেগুনাতে ভাড়া ৮০ টাকা। জুরাইন রেল গেট থেকে পোস্তগলা ব্রিজ পার হতে হবে। পোস্তাগলা ব্রিজ পার হলেই সারিঘাট যাওয়ার অটোরিকশা বা সিএনজি পেয়ে যাবেন। লোকাল সিএনজিতে ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা। লোকাল সিএনজির ঝামেলায় যেতে না চাইলে জুরাইন রেল গেট থেকে সিএনজি রিজার্ভ নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ১২০ টাকা। একসঙ্গে ৪/৫ জন গেলে জুরাইন বা পোস্তগোলা থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে যাওয়াই ভালো। ফেরার পথেও ওখান থেকে সিএনজি পাওয়া যাবে।
কখন যাবেন
সারাবছরই সারিঘাট যাওয়া যায়। সারিঘাট ভ্রমণের জন্য একটা বিকেলই যথেষ্ট। সাধারণত শুক্রবার বিকেলে এখানে প্রচুর লোক সমাগম হয়। ভিড় পছন্দ না করলে শুক্রবার বিকেলে না যাওয়াই ভালো। কেউ চাইলে সারিঘাট এ ক্যাম্পিং করতে পারবেন। সেখানেই ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থা আছে। তবে ক্যাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে গ্রুপ করে যাওয়াই ভালো।
কি দেখবেন সারিঘাট
সারিঘাট এর বিশাল সবুজ প্রকৃতি, নদী, গাছপালা, খোলা জায়গা এসব আপনাকে প্রশান্তি দেবে। নদীতে কায়াকিং ও নৌকা ভ্রমণের সুযোগ আছে। কেউ চাইলে কায়াকিং ও নৌকা ভ্রমণও করতে পারবেন। গোসলও করা যাবে এখানে। নদীর পানি যথেষ্ট পরিষ্কার। কায়াকিং এর খরচ পড়বে জনপ্রতি ঘণ্টায় ১৫০ টাকা, ৩০ মিনিটের জন্য ৭৫ টাকা। নৌকা ভ্রমণ ১০০-১৫০ টাকা। তবে আগে থেকে দরদাম করে নেয়াই ভালো। কায়াক হচ্ছে এক ধরনের ছোট ফাইবার বোট। বৈঠা বা লগি ব্যবহার করে এটি চালানো যায়। কায়াকে করে ভেসে বেড়াতে পারবেন পানি দেখতে দেখতে। এর জন্য কোনো ধরনের অগ্রিম প্রশিক্ষণের দরকার হয় না। শুধু ডানে ও বামে নেওয়ার কৌশল রপ্ত করলেই হবে। এ ছাড়া সারিঘাট এর খোলা জায়গার নির্জনতায় অনেকটা সময় কাটিয়ে দিতে পারেন। এখানে কিছু ঝুপড়ি দোকান আছে। হালকা খাবার দাবারের জন্য এই দোকানগুলোই যথেষ্ট। সেখানে দুপুরের খাবার দাবারও পাওয়া যাবে। দুপুরের খাবারের ক্ষেত্রে খরচ হবে জনপ্রতি খরচ হবে ১৫০-২০০ টাকা। খাবারের মেন্যু হিসেবে থাকবে ভাত, ভর্তা, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল।
সতর্কতা
সাঁতার না জানলে কায়াকিং এর সময় অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরে নেবেন। এর জন্য কোনো অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে না। কায়াকিং শুরুর আগে এবং শেষে নিজের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র সামলে রাখবেন। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে অতিরিক্ত লোক সমাগম এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, চিপস ও বিরিয়ানির প্যাকেট বা খাবারের উচ্ছিষ্টাংশ ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না। শুধু ভ্রমণে গিয়ে নয়, প্রত্যাহিক জীবনেও যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকুন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন