নীলফামারীতে গবাদী পশুর খাদ্য নেপিয়ার ঘাস চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। উন্নত জাতের এ ঘাস মেটাচ্ছে গবাদিপশুর খাদ্য চাহিদা। গ্রামেগঞ্জে খড়ের বিকল্প গরু-ছাগলসহ অন্যান্য গবাদিপশুকে খাদ্য হিসেবে দেওয়া হচ্ছে নেপিয়ার ঘাস। এতে করে দিন দিন বাড়ছে উন্নত জাতের এই ঘাসের চাষাবাদ। নিজেদের পশু খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ঘাস বিক্রি করে বাড়তি আয়ের মুখ দেখছে কৃষকেরা।
জানা যায়, নেপিয়ার ঘাস চাষে তেমন পরিশ্রম না হওয়ায় অনাবাদি জমি, বাড়ির আঙিনা, পুকুর পাড়, রাস্তার দু`ধারে ও পতিত জায়গায় ঘাস চাষ হচ্ছে। খুব বেশি ব্যয় না হওয়ায় কৃষকেরা অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে লাভবান হচ্ছেন। এ জাতের ঘাস রোপণের এক থেকে দুই মাসের মাথায় কাটার উপযোগী হয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে একই গোছা (গোড়া) থেকে চারা গজায়। সে ক্ষেত্রে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে কাটার উপযোগী হয়। একবার ঘাস রোপন করলে অনবরত ঘাস পাওয়া যায়। ফলে খরচ কম হয়।
সদরের লক্ষীচাপ ইউনিয়নের চাষি রুবেল সরকার বলেন, `আমি ১২ বছর থেকে এ ঘাসের চাষ করে আসছি। এতে কোন লোকসান নেই বরং লাভের পরিমান তিনগুন থাকে। বিক্রি করতেও তেমন অসুবিধা হয় না। ঘাস চাষ করে আমি এখন পরিবার নিয়ে অনেক ভালো আছি।`
ডোমার উপজেলার রাজু মিয়া বলেন, `আমি ১১ বছর থেকে নেপিয়ার ঘাস চাষ করছি। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ করছি, ফলন বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ১৬ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে আমার প্রায় ২ লক্ষ টাকা লাভ হবে।`
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এম ফরহাদ নোমান বলেন, `নেপিয়ার ঘাস গরুর স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এই ঘাসে পুষ্টি বেশি। কোনো ক্ষতিকর প্রভাব না থাকায় এ ঘাস গবাদিপশুর জন্য খুবই উপযোগী। শতকরা ১৬-১৮ শতাংশ প্রোটিন পাওয়া যায় এই ঘাসে। এ ছাড়া খাদ্য হিসেবে শুধু ঘাস দিলে গরুর পরিপাকব্যবস্থা ভালো থাকে।`
জানতে চাইলে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আতিক আহমেদ বলেন, `নেপিয়ার ঘাসে অনেক পুষ্টিগুন রয়েছে। আমরা কৃষকদের ঘাস চাষের জন্য অনেক পরামর্শ দিয়ে থাকি। প্রতি একরে ফলন প্রায় ৫০ টন পর্যন্ত ঘাস উৎপাদন হয়। এটি একবার রোপন করলে প্রায় ৭-৮ বছর পর্যন্ত ঘাস পাওয়া যায়। খামারীরা এখন বেশী চাষ করছেন। এ ঘাস চাষ করে কৃষকরা নিজেদের পশুখাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।`