শুক্রবার, ০২ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০১:০২ পিএম

মানবপাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট টেকনাফ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০১:০২ পিএম

মানবপাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট টেকনাফ

ছবি: রুপালী বাংলাদেশ

শীত আসতে না আসতেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত টেকনাফ উপজেলায় মাদক ও মানবপাচারের হিড়িক চলছে, পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে আসছে প্রজন্ম বিধ্বংসী মরণ নেশা ইয়াবা-আইস এর বড়-বড় চালান।

সূত্রে জানা যায়, উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা তরুণী-কিশোরীদের পাচার করে বিনিময়ে লাখ লাখ পিস ইয়াবা আমদানি করছে। ইতিমধ‍্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এসব মাদকের একাধিক চালান ধরা পড়েছে এবং মালয়েশিয়া পাচারের সময় অনেক রোহিঙ্গা ভিকটিম উদ্ধার হয়েছে, আটক হয়েছে দালালেরাও।

কিন্তু পর্দার আড়ালে থেকে গেছে এসব ভয়াভয় অপরাধের আসল ভিলেন। প্রশাসন তাদের ধরতে তৎপর হলেও অদৃশ‍্য কারণে তারা থেকে যায় বহাল তবিয়তে। এসব দুর্ধর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা বর্তমানে মানবপাচার-মাদক নিয়ন্ত্রণ করছে।

সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের নাফনদী ও সমুদ্র উপকূলবর্তী ইউনিয়ন সেন্ট মার্টিন, সাবরাং,শাহপরীর দ্বীপ,পৌর সভা, টেকনাফ সদর, বাহারছড়া, হ্নীলা, হোয়াইক্যং সহ নাফনদী ও সমুদ্র উপকূলের বিভিন্ন মৎস্য ঘাট এখন মানব পাচারের এয়ারপোর্টে পরিণত হয়েছে পাশাপাশি ফেরার পথে মানব এর বদল করে মিয়ানমার থেকে একই বোট নিয়ে আসছেন ইয়াবা-আইসেই বড় বড় চালান।

জানা যায়, টেকনাফ উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার হয়ে মালয়েশিয়া পাচারের সময় প্রায় শতাধিক রোহিঙ্গা নারী-পুরুষসহ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় দালালকে আটকের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেছে। ইয়াবা-মানব পাচারের সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই অন্তত বিশ ঘাট পয়েন্ট দিয়ে মাদক ও মানব চলছে দেদারসে।

বিশেষ করে সেন্টমার্টিন ছেঁড়া দ্বীপ, দক্ষিণ পাড়া ঘাট, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়া, গোলারচর, মিস্ত্রি পাড়া, দক্ষিণ পাড়া, পশ্চিম পাড়া ঘাট, টেকনাফ সদরের মহেশ খালিয়া, তুলাতুলী, রেঙ্গুলবিল ঘাট, মিটা পানির ছড়া, হাবিব ছড়া ঘাট, সাবরাংয় ইউপি‍‍`র কচুবনিয়া, কাঁটা বনিয়া, বাহাড় ছড়া, মুন্ডার ডেইল, হাদুর ছড়া ঘাট, কুরাইজ্যা পাড়া ঘাট, টেকনাফ পৌর সভার নাইট্যং পাড়া, বড়ইতলী, কেরুনতলী, দমদমিয়া, মোচনী, লেদা, আলীখালি, ফুলের ডেইল, উপকূলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়া নোয়াখালী পাড়া, জুম্মা পাড়া, হাজাম পাড়া, কচ্ছপিয়া, বড় ডেইল ঘাটসহ বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মানব পাচার ও ইয়াবা প্রবেশ হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

মানবপাচারের মতো এই মানবতাবিরোধী কাজে লিপ্ত রয়েছে প্রায় অর্ধশত দালাল ও গডফাদার এবং এদের সাথে সহযোগিতায় রয়েছে প্রায় দুইশত লোকজন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্থানীয়রা অবৈধভাবে সাগর পথে মালয়েশিয়া পাড়ি দিলেও সরকারের জনসচেতনামূলক প্রচারণায় এখন তারা সেই ঝুঁকি নিচ্ছে না, তারা সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে অবৈধ পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়া যাচ্ছে শুধু রোহিঙ্গারা।

একাধিক সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের প্রথমে দালালেরা ১০ হাজার টাকা হাত বদল করে ক্যাম্প থেকে সিএনজি, অটোরিকশা ও বাস যোগে টেকনাফ পৌর এলাকায় নিয়ে এসে দালালের কাছে জমা রাখে, পরে তাদেরকে আবার দশ হাজার টাকায় আরেক আসল দালালকে বিক্রি করে দেয় পরে তাদেরকে ছোট নৌকায় তুলে মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন সাগর থেকে অন্তত ৫ কিলোমিটার গিয়ে বড় বোটে তুলে দেয়,সে বোট রাতের মধ্যেই মিয়ানমারে পৌঁছায়। পরে বড় জাহাজে করে তাদেরকে শক্তিশালী মানবপাচার সিন্ডিকেটের সদস্যরা মালয়েশিয়া পৌঁছায়। প্রতিজন থেকে ৩ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ বাহারছড়া বিভিন্ন ঘাটের সমুদ্র সৈকত এলাকার পার্শ্ববর্তী বাড়ি ও ঝোপ-জঙ্গলে এনে জড়ো করে রাখে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে তাদের বাহির করে ছোট ছোট ফিশিং বোট দিয়ে মিয়ানমার পৌঁছে দেয় এবং মিয়ানমার থেকে আসার সময় ইয়াবা বড়-বড় চালান নিয়ে ভোরে মাছ আহরণে গেছে ঘাটে ভিড়ে জালে গাইড নিয়ে খালাস করে কারবারিরা।

পাচারের পর মিয়ানমারে এসব রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণীর ভাগ্যে কী জুটছে তা আর জানা যাচ্ছে না। সেখানে নিয়ে দ্বিতীয় দফা মুক্তিপণ দাবি করে ফিরে আসা অনেকের অভিযোগ। মিয়ানমার থেকে গভীর সমুদ্র পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া প্রবেশ করে বলে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।

সাম্প্রতি দালালের জিম্মি দশা থেকে থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা উপজেলার সাবরাং ইউপির ২নং ওয়ার্ডের ছৈয়দ আলমের ছেলে মোহাম্মদ জুসেফ রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমাকে একটি মানব পাচারকারী দালাল সিন্ডিকেট জোর পূর্বক মালয়েশিয়া পাচার উদ্দেশ্যে টেকনাফ সাবরাং থেকে নিয়ে যায় পরে ৩লাখ টাকায় দালালের কাছে বিক্রি করে দেয়।পরে অনেক কষ্টে পনের দিন পর মুক্তিপণ দিয়ে আমাকে ফিরিয়ে আনা হয়।

টেকনাফ কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি রূপালী বাংলাদেশকে জানান, মিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়াগামী মানব পাচারকারী ফিশিং ট্রলার মিয়ানমারে পৌঁছে নিয়ে আসার সময় মাদক নিয়ে আনার বিষয়ে খবর থাকলেও আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য পেলে অভিযান পরিচালক করা হবে।

টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, মানব পাচারের সাথে মাদক কারবারিরা জড়িত দালালদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। স্থানীয় দালাল ও মানব পাচারকারী তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন আমরা অভিযান পরিচালনা করবো।

আরবি/জেআই

Link copied!