ঢাকা রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫

টেকনাফে পরিত‍্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে খাদ‍্যপণ‍্য

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৮:২১ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

কক্সবাজার টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে খাদ‍্যপণ‍্য দিচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে টেকনাফ ও সেন্টমারটিন দ্বীপে শুরু হয়েছে "প্লাস্টিকের বিনিময়ে বাজার" করমসূচী। যেখান থেকে আজ ১ম দিনে ৭০০ স্থানীয় দুস্থ পরিবার প্লাস্টিকের বিনিময়ে খাদ‍্যপণ‍্য (বাজার) করতে পেরেছেন। 

২টা বাজার ইভেন্টে প্রায় ৫ মেট্রিক টনের বেশি প্লাস্টিক সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই প্লাস্টিক সমুহ পুরোটাই রিসাইকেল করা হবে।

শনিবার ১৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১১ টায় টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়া বিজিবি ক‍্যাম্প সংলগ্ন পুর্ব পাশে এই কর্মসূচীর উদ্ভোদন করেন টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী।

সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফের নাফ নদীর পাশে বিজিবি মাঠে বিশাল একটি সুপারশপ বসেছে নানা রকমের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পসরা নিয়ে। মানুষ প্লাস্টিকের বিনিময়ে এসব কিনতে পারছেন। বাজারে ১ কেজি প্লাস্টিকের দাম ২০-৩০ টাকা হলেও এই বাজারে সেটির প্রায় ৫০-৮০ টাকা মুল্য দেয়া হচ্ছে। ১ কেজি প্লাস্টিক দিয়ে ১ কেজি চাল যেমন পাওয়া যাচ্ছে তেমনি ৬ টি ডিম পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১ কেজি প্লাস্টিকে! প্রায় ১৯ টি পণ্য থেকে নিজেরাই বাছাই করে কেনার স্বাধীনতা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

তেমনি সেন্টমার্টিন জেটি ঘাটস্থ সমুদ্র সৈকতে বসেছে প্লাস্টিকের বিনিময়ে বাজার করমসূচী। সেন্টমার্টিনের মানুষের কাছে প্লাস্টিকের কোন মুল্য নেই। কারন সেখানে কোন ভাংগারির দোকান নেই। নেই কোন রিসাইক্লিং ব্যবস্থা। সেখানের মানুষের জন ১০০% সাবসিডি দিয়ে বাজার পাচ্ছেন।

এসি (ল্যান্ড) তার বক্তব্যে বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের অস্তিত্বের হুমকি হচ্ছে প্লাস্টিক। যে কোনো সমস্যা সমাধানে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেওয়া সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। নদীমাতৃক এই দেশের প্রাণপ্রবাহ বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণে বিপন্ন প্রাণীকুলকে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।

এই পৃথিবীকে সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত ও বাসযোগ্য রাখতে হলে সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।

বিদ্যানন্দের বোর্ড সদস্য মো. জামাল উদ্দিন বলেন, প্লাস্টিক দূষনের মাত্রা এতই ব্যাপক যে এটি সরকারের একার পক্ষে রোধ করা একেবারেই অসম্ভব। এই দূষন কমাতে দরকার ব্যাপক জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা। তাই মানুষকে সম্পৃক্ত করতেই আমরা সারাদেশে প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর চালু করছি।এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কে আমরা অবহিত করেছি। আশা করছি এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্লাস্টিকের ভয়াবহতা সম্বন্ধে আমরা জনগনকে ধারনা দিতে পারব ও প্লাস্টিক দূষণ রোধে আমাদের এই আইডিয়া বাস্তবায়নে সরকারও এগিয়ে আসবে।

দেশব্যাপী এই প্রজেক্টে আর্থিক সহযোগিতা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। কক্সবাজার জেলায় এই প্রোগ্রাম বাস্তবায়নে সহযোগী করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার।