ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নে নির্মাণাধীন সড়কের প্রায় ৫,০০০ ইট তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতা মো. মোক্তার হোসেন ফরাজীর বিরুদ্ধে। গত কয়েকদিন যাবত দিবালোকে প্রকাশ্য তিনি সড়কের ইট গুলো তুলে নেন। ইট তুলে নেয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্ধারা বাধা দিলে তাদের বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেয়া ও মামলায় জড়ানোর হুমকির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও তার দাবী তিনি ঢালচর ইউনিয়নের প্রশাসক ঢালচর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহিদুল ইসলামের অনুমতি নিয়েই সড়কের ইট তুলে নিয়ে স্থানীয় একটি মসজিদে দান করেছেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে পর্যটন দ্বীপ ঢালচরের মানুষ ও পর্যটকদের যাতায়তের সুবিধার জন্য ঢালচর বাজার থেকে আনন্দ বাজার ভায়া কোষ্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত প্রায় ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি হেরিংবন সড়ক নির্মান করা হয়। তবে সড়কটি ঘূর্ণিঝড় দানার
প্রভাবে অতিজোয়ারের প্রভাবে ওই সড়কটির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে ওই সড়কটি পূর্ন মেরামতের জন্য প্রক্রিধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে অতিজোয়ারের প্রভাবে ওই সড়কটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সুযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরই স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের বসত ঘরে ব্যবহারের জন্য সড়কের ইটগুলো তুলে নেয়া শুরু করেন। সম্প্রতি সময়ে দিনের আলোতে প্রকাশ্য স্থানীয় যুবদলের সহ-সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন ফরাজী নিজের পারিবারিক কাজে ব্যবহারের জন্য সড়ক থেকে প্রায় ৫০০০ ইট তুলে নিয়ে যান।
স্থানীয়রা বাধা দিলেও কোন প্রতিকার হয়নি। উল্টো স্থানীয়দেরকে মামলায় হয়রানি ও বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন ওই যুবদল নেতা। এতে থেমে যাননি ওই যুবদল নেতা মোক্তার ফরাজী। তিনি স্থানীয়দের বাধা উপেক্ষা করে সড়ক থেকে ইটগুলো তুলে নেন। এতে প্রায় তিনি ৫০০০ হাজার ইট তুলে নিয়ে গেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। নিজের ক্ষমতার বলয়ে প্রভাব খাটিয়ে সড়কের ইট তুলে নেয়ায় বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্ধাসহ ঘুরতে আসা পর্যটকরা। ইট তুলে নেয়ার ফলে ওই এলাকার মানুষের যাতায়াতের বিঘ্ন হচ্ছে। ভোগন্তিতে পড়েছে ওই গ্রামের কয়েকশ পরিবার। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি পূর্ণনির্মান ও ওই যুবদল
নেতার বিচারের দাবী জানান।
অভিযুক্ত যুবদল নেতা মোক্তার হোসেন জানান, জোয়ারের প্রভাবে সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় তিনি সড়ক থেকে কিছু ইট তুলে নিয়ে একটি মসজিদে দান করেছেন। তিনি সরকারী সড়কের ইট তুলে নিয়ে মসজিদের দান করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন ক্ষমতা থাকলে সবই করা যায়। যত খুশি আপনারা লিখেন এতে আমার কিছুই হবেনা।
ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও ঢালচর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাহিদুল ইসলাম তার কাছ থেকে অনুমোতি নিয়ে ইট নেয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, সরকারী সড়কের ইট নেয়ার অনুমোতি দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই। সড়কের ইট তুলে নেয়ার বিষয়ে ওই যুবদল নেতার সাথে আমার কোন কথা হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিএম অলি উল্লাহ জানান, সরকারী সড়কের ইট তুলে নেয়ার বৈধতা করো নেই। আর সড়কের ইট তুলে
নিয়ে কোন প্রতিষ্টানে দান করার তো কোন প্রশ্নই উঠেনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দক্ষিণ আইচা থানা বিএনপির একাংশের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. ফারুক মাষ্টার বলেন, সরকারী সড়কের ইট তুলে নিয়ে কোথাও দান করা বা নিজের কাজে ব্যবহার করার করো বৈধতা নেই। আমাদের দলের কেউ যদি এমন অপকর্ম করে থাকে তাহালে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানান, এ বিষয়ে কেউ আমাকে জানায়নি। সড়কের ইট তুলে নেয়ার বৈধতা কারো নেই। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে তদন্ত স্বাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
        
                            
                                    

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
                                    
                                    
                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                            
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন