চোখে অশ্রু, হৃদয়ে বাবাকে হারানোর বেদনা তবুও জীবনের কাছে হার মানেননি মেহনাব হোসেন। বাবার দাফন সম্পন্ন করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে অদম্য সাহস ও মনোবলের পরিচয় দিয়েছেন এই শিক্ষার্থী।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া ইউনিয়নে জানাজা ও দাফনের কাজ শেষ হয় মেহনাবের বাবার। এরপর কোনো বিরতি না নিয়ে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিতে রওনা দেন তিনি। পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল কালাইয়া রাব্বানীয়া ফাযিল মাদ্রাসা।
গত শনিবার মালদ্বীপে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মেহনাবের বাবা। তার বাবা একজন প্রবাসী শ্রমিক, নাম জসিম উদ্দিন (৪৫)। মঙ্গলবার রাতে তার মরদেহ দেশে পৌঁছায়। পরদিন সকালে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়।
বাবাকে চিরবিদায় জানানোর পরও নিজ দায়িত্ব ভুলে যাননি মেহনাব। পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে প্রমাণ দিয়েছেন সংকটের মধ্যেও শিক্ষা এবং দায়িত্ববোধকে প্রাধান্য দেওয়া যায়।
স্থানীয়রা বলেন, জসিম উদ্দিন আজ বেঁচে থাকলে ছেলের এই মনোবল ও কর্তব্যপরায়ণতা দেখে গর্বে বুক ভরে যেত তার।
জসিম উদ্দিনের স্ত্রী মাসুমা আক্তার বলেন, ‘উনি সবসময় বলতেন সন্তানদের পড়ালেখা যেন কোনোভাবেই বন্ধ না হয়। ওদের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল ওর জীবনের বড় স্বপ্ন।’
বাবার স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে পরীক্ষার আসনে বসে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মেহনাব। এই সাহসিকতা, দৃঢ়তা এবং দায়িত্ববোধ আজ সমাজের সব শিক্ষার্থীর জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :