বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর রেলস্টেশনে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়া মতিউর রহমান (৪০) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সোমবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে আহসান হাবিব। মতিউর নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের বাসিন্দা।
গত দুই বছর ধরে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করতেন তিনি। এর আগে অটোরিকশা চালাতেন তিনি। বিদেশে পাঠানো এক যুবকের কাগজপত্র নিয়ে ঝামেলার জেরে রোববার (১৮ মে) দুপুরে তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার একটি ভিডি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে স্থানীয় লোকজন ধারণা করেন, তিনি মোবাইল চোর বা ছিনতাইকারী। সেই ধারণা করে ট্রেন থেকে পড়ার পর তাকে উল্টো গণপিটুনি দেওয়া হয়।
মতিউরের ছেলে আহসান বলেন, আমার বাবা সজীব হোসেন নামের এক যুবককে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকায় সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাগজপত্র পেতে কিছু বিলম্ব হয়। এরপর থেকেই সজীবের পরিবার হুমকি দিতে থাকে। ঘটনার দিন ট্রেনে বাবাকে একা পেয়ে সজীবের ভাই রাকিব ও শ্যালকেরা চোর অপবাদ দিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। তার কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয়।
আহসান আরও বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। তারপর বাবাকে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সন্ধ্যায় চিকিৎসকের পরামর্শে বাবাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরেছি। বাবার বুক, মাথা, পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক জখম হয়েছে।
ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে সজীবের ভাই রাকিবের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তাদের বাবা মোহাম্মদ হেলাল বলেন, আমার ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়ে এখনো কাজ দিতে পারেনি মতিউর। তবে ট্রেনে কী হয়েছে, আমি জানি না। হুমকি দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা।
এদিকে এ বিষয়ে অভিযোগ নিতে আদমদীঘি থানা ও সান্তাহার রেলওয়ে থানার পুলিশ গড়িমসি করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আহসান জানান, ঘটনার পর অভিযোগ জানাতে আদমদীঘি থানায় গেলে তারা বিষয়টি সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশের বলে ফিরিয়ে দেয়। ওই দিন সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছিল। তবে ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর আজ সান্তাহার রেলওয়ে পুলিশ অভিযোগ নিয়েছে। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি চাই।
জানতে চাইলে আদমদীঘি থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি রেলওয়ে থানা এলাকার মধ্যে। এ জন্য এটি রেলওয়ে পুলিশের বিষয়।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ঘটনার দিন তারা থানায় এসে সেন্ট্রির সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। ভুক্তভোগী একজনের নামসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। দ্রুতই আসামি আটক হবে বলে আশা করছি।