রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১১:১৮ এএম

নৌকায় ভাসে সালথার স্বপ্ন

মনির মোল্যা, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১১:১৮ এএম

সালথার মোন্তার মোড়, সাড়ুকদিয়া, নকুলহাটি ও মাঝারদিয়া গ্রাম পরিণত হয় নৌকা শিল্পপল্লীতে ।    ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সালথার মোন্তার মোড়, সাড়ুকদিয়া, নকুলহাটি ও মাঝারদিয়া গ্রাম পরিণত হয় নৌকা শিল্পপল্লীতে । ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বর্ষা মানেই বৃষ্টি, খাল-বিল-নদীতে টলমলে পানি আর গ্রামবাংলার এক চিরচেনা দৃশ্য কাঠের নৌকা। এই ঐতিহ্যবাহী মাধ্যমটি শুধু যাতায়াতের উপায় নয়, বরং হাজারো মানুষের জীবিকার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও হাট-বাজারে এখন চলছে সেই কাঠের নৌকা তৈরির মৌসুমি ব্যস্ততা।

উপজেলার মোন্তার মোড়, সাড়ুকদিয়া, নকুলহাটি, মাঝারদিয়াসহ পুরো সালথার একেকটি ক্ষুদ্র ‘নৌকা শিল্প পল্লী’। প্রতিটি জায়গায় দেখা যাচ্ছে কাঠের গুঁড়ি, করাতের শব্দ, হাতুড়ির ঠোকাঠুকি আর রং-তুলির ছোঁয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।

দিনরাত এক করে চলছে নৌকা তৈরির কাজ। মোন্তারমোড় বাজারসংলগ্ন একটি নৌকা কারখানায় কথা হয় কারিগর মো. সিরাজ মোল্লার সঙ্গে। তিনি ২০ বছর ধরে এ পেশায় যুক্ত। তার কথায়, বর্ষা আসার দেড়-দুই মাস আগে থেকেই আমাদের কাজ শুরু হয়। এখন তো অর্ডারের চাপে খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো করতে পারি না।

তিনি বলেন, একটা মাঝারি আকারের নৌকা বানাতে লাগে ৩ থেকে ৪ দিন। কাঠ, রং, হাতুড়ি, করাত, সবই আমাদের নিয়ন্ত্রণে। প্রতি মৌসুমে অন্তত ৫০ থেকে ৭০টি নৌকা বানাই আমরা।

একই কারখানার তরুণ কারিগর রফিক শেখ জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় জীবন বদলালেও কাঠের নৌকার কদর কমেনি। এখনো কৃষক, জেলে, এমনকি স্থানীয় দোকানদাররা পর্যন্ত বৃষ্টির মৌসুমে এই নৌকা ব্যবহার করেন। খাল-বিল, বৃষ্টির পানি জমা রাস্তায় এটি সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম।

এখানে বৈচিত্র্যময় আকারে ও দামে মিলছে কাঠের নৌকা। নৌকার দামের ক্ষেত্রেও রয়েছে বৈচিত্র্য। ছোট আকারের নৌকা ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। আর বড় আকারের, শক্ত কাঠের তৈরি ও রঙিন নৌকার দাম পড়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, বাজারে অনেকেই এখন টিনের বা ফাইবারের নৌকা ব্যবহার করছেন ঠিকই, কিন্তু ভারসাম্য ও টেকসই ব্যবহারের জন্য আজও কাঠের নৌকার চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

শুধু পণ্য নয়, জীবিকার এক উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই নৌকা তৈরির পেছনে আছে বহু মানুষের রুটি-রুজির গল্প। কাঠ সরবরাহকারী, রংমিস্ত্রি, বাহক-প্রত্যেকে এই শিল্পচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারখানা মালিক মো. ফিরোজ মোল্লা বলেন, বর্ষাকাল মানেই আমাদের জন্য ঈদের মৌসুম। এই সময়ের আয়ে অনেকেই সারা বছরের খরচ চালায়।

স্থানীয় প্রবীণ শিক্ষক অনন্ত কুমার বলেন, নৌকা শুধু যানবাহন নয়, এটি আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ। বিয়ে, উৎসব বা গ্রামীণ মেলায় আগে যেভাবে নৌকার ব্যবহার ছিল, এখনো তা অনেক এলাকায় দেখা যায়। তাই যত আধুনিকতাই আসুক, কাঠের নৌকার আবেদন এখনো অটুট।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!