শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ০১:১৭ পিএম

পূরণ হলো না মায়ের স্বপ্ন, মিছিলে গিয়ে লাশ হয়ে ফেরেন জিহাদ

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ০১:১৭ পিএম

মা শাহিনুর বেগম ছেলের ছবি হাতে কান্না করছেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মা শাহিনুর বেগম ছেলের ছবি হাতে কান্না করছেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো ন্যায়বিচার পায়নি শহীদ জিহাদ হত্যাকাণ্ডের পরিবার। গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারানো মেধাবী শিক্ষার্থী জিহাদের মৃত্যুর পর থেকে আজও ন্যায়বিচারের আশায় অপেক্ষা করছেন তার মা শাহিনুর বেগম ও পরিবারের সদস্যরা।

ছেলের মৃত্যুতে শোকে কাতর মা এখনও অপেক্ষায় থাকেন- হয়তো একদিন ফিরবে তার প্রাণপ্রিয় সন্তান। বুকের কাছে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন জিহাদের রক্তমাখা জামা, ঘরজুড়ে ছড়িয়ে আছে জিহাদের স্মৃতি।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘ছেলেকে বিসিএস ক্যাডার বানিয়ে ঘরে তুলব, নাতি-নাতনির মুখ দেখব- এই ছিল আমার স্বপ্ন। কিন্তু ঘাতকের গুলিতে আমার সব স্বপ্ন ভেঙে গেল।’

স্বপ্ন পূরণের আগেই ঝরে গেল জীবন

মেধাবী ছাত্র জিহাদ ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও ২০১৮ সালে এইচএসসি পাশ করেন স্যার সলিমুল্লাহ কলেজ থেকে। পরে কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে ইতিহাস বিভাগে অনার্স সম্পন্ন করে এমএ প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। জিহাদের বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দিগন্ত সড়ক এলাকার বাসিন্দা।

ছেলের কবরের পাশে বাবা মা।

গত বছরের ১৯ জুলাই, বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় স্বৈরাচার বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলন শেষে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন জিহাদ।

গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

পরদিন রাত ১০টার দিকে তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়। থানা পুলিশের চাপ ও বাধার মুখে ২১ জুলাই সকাল ৬টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।

মায়ের কান্না, বাবার হতাশা

জিহাদের মা শাহিনুর বেগম বলেন, ‘প্রায়ই স্বপ্নে দেখি আমার জিহাদ ফিরে এসেছে, বলে মা আমি এসেছি। ঘুম ভাঙলেই বুঝি, সবকিছু মিথ্যে। এখন একটাই চাওয়া, আমার সন্তানের হত্যার বিচার যেন দেখে যেতে পারি।’

শহীদ জিহাদের বাবা বলেন, ‘ছেলের মৃত্যুর আগে আমার সঙ্গে শেষ কথা হয় দুপুরে। বলেছিল, ‘বাবা, ভাত খেয়ে শুয়ে আছি।’ কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পাই, গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এরপরই মৃত্যুর খবর। মনে হয়েছিল আকাশ ভেঙে পড়েছে।’

শহীদ জিহাদের বাবা মা। 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ দাফন নিয়েও বাধা দেয়। এমনকি আমাকে ও আমার ভাইকে গুলি করার প্রস্তুতি নেয়। এক বছর পার হলেও আজও কোনো বিচার হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে একটাই দাবি- আমার সন্তানের হত্যার বিচার চাই।’

বিচারহীনতায় এক বছর 

এক বছরেও বিচার না পেয়ে হতাশ জিহাদের পরিবার। তারা প্রশ্ন রাখছেন, ‘আসলেই কি আমরা ছেলে হত্যার বিচার পাবো?’

মেধাবী এক তরুণের স্বপ্ন ছিল রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একজন কর্মকর্তা হয়ে দেশের সেবা করার। কিন্তু সেই স্বপ্ন থেমে গেছে রাষ্ট্রীয় গুলিতে।

শহীদ জিহাদের পরিবারের দাবি, অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের নিশ্চয়তা দেওয়া হোক।

Shera Lather
Link copied!