বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ধাপ সুলতানগঞ্জ হাটের প্রধান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে চরম অবহেলার শিকার হয়ে এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন হাজারো পথচারী, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষিপণ্যবাহী যানবাহন এবং হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
বিশেষ করে প্রতি বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ হাটে বেচাকেনার জন্য আসেন। কিন্তু প্রধান সড়কটির বেহাল দশা ও ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কারণে হাটে আসা মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে। শুধু হাটের দিন নয়, প্রতিদিনই এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে নিত্য দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ধাপ হাটের মাঝখান দিয়ে সড়কটি মোস্তফাপুর, মধুপুকুর, শিবপুর ও মোলামগাড়ী হয়ে জয়পুরহাটের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত। এই সড়ক ব্যবহার করে চামরুল ইউনিয়নের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ ছাড়াও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন।
সড়কটির পিচ ও খোয়া উঠে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে তৈরি হয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, সড়কটির দুপাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য কোনো পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। এতে করে বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে সড়কের ওপরই জমে থেকে ধীরে ধীরে রাস্তা ধ্বংস করে দিচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন ও ফিরোজ জানান, মেইল বাসস্ট্যান্ড থেকে ধাপ হাট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা এখন চলাচলের অযোগ্য। প্রতিনিয়ত পথচারী, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এমনকি অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে থাকে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শুকুর আলী বলেন, সড়কটির অবস্থা এতটাই খারাপ যে, আমাদের উৎপাদিত পণ্য সময়মতো বাজারে পৌঁছাতে পারি না। এতে আমাদের পরিবহন খরচ ও সময় উভয়ই বেড়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে।
চালকেরা জানান, প্রতিদিনই ছোট গাড়ি গর্তে আটকে দুর্ঘটনার শিকার হয়, আর ভারী যানবাহনের যন্ত্রাংশ বারবার নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে দুপচাঁচিয়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম রঞ্জু জানান, ধাপ হাটের এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এলজিইডির আওতাভুক্ত। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সড়কটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। খুব দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলে কাজ শুরু করা হবে।
সড়কের দ্রুত সংস্কার ও পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার দাবিতে স্থানীয় জনগণ, হাটের ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
তাদের মতে, ধাপ হাট সড়কটি শুধু একটি রাস্তা নয়, এটি স্থানীয় অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার অন্যতম ভিত্তি। তাই এটিকে অবহেলা করা চলবে না।
আপনার মতামত লিখুন :