ইসলামী ব্যাংকের জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর এজেন্ট শাখায় গ্রাহকদের কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাতের মামলায় রিমান্ডে থাকা তিন আসামি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। রিমান্ডে ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা স্বীকার করেছেন, আত্মসাৎ করা অর্থ দিয়ে তিনি জমি কেনা, মাছ চাষের ব্যবসা, ব্যাংকের আরেকটি এজেন্ট শাখা গ্রহণসহ নানা বিনিয়োগ করেছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) তিন দিনের রিমান্ড শেষ হলে আসামিদের ইসলামী ব্যাংকের আক্কেলপুর এজেন্ট শাখায় নিয়ে আসে পুলিশ। এ সময় ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখার ব্যবস্থাপক, গণমাধ্যমকর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তল্লাশি চালিয়ে ব্যাংকের ভল্ট থেকে নগদ অর্থ, নথিপত্র, চেক ও ছাপা ভাউচার জব্দ করা হয়।
রিমান্ডে থাকা তিন আসামি হলেন- এজেন্ট শাখার মালিক জাহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক রিওয়ানা ফারজানা এবং ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা। গত সোমবার তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা আত্মসাৎ করা অর্থ কোথায়, কীভাবে ব্যয় করেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র ‘রূপালী বাংলাদেশ’-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রিমান্ডে ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা জানিয়েছেন, তিনি আত্মসাৎ করা টাকায় ১৭ বিঘা জমি বন্ধকী, চার বিঘা জমি ক্রয়, পুকুর লিজ, মাছের খাদ্যের দোকান ও ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখা নিয়েছেন।
এ ছাড়া তিনি দাবি করেন, ইসলামী ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখার সাবেক কর্মকর্তা আবুল হোসেনকে তিনি ২০ লাখ টাকা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শাখা ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, আবুল হোসেন কিছুদিন ওই এজেন্ট শাখার ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশের কাছে মাসুদ রানা তার কাছে টাকা দেওয়ার বিষয়টি বলেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গোলাম রব্বানী বলেন, রিমান্ডে আসামি মাসুদ রানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। ব্যাংকের ভল্ট থেকে নগদ টাকা, ভাউচার ও চেক জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এই এজেন্ট শাখায় প্রায় আড়াই হাজার হিসাবধারী রয়েছেন। গ্রাহকদের দাবি, ‘সার্ভার সমস্যার’ অজুহাতে বারবার ভাউচার ও চেক ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
প্রতারিত গ্রাহকেরা ৯ এপ্রিল আক্কেলপুর ও ১৩ এপ্রিল জয়পুরহাটে ইসলামী ব্যাংকের শাখা কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন।
গ্রাহক আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আব্দুস ছালাম মাস্টার সাংবাদিকদের জানান, প্রায় চার কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে এবং ব্যাংকের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনাও এ ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।
আপনার মতামত লিখুন :