কক্সবাজারের চকরিয়ায় থানা হেফাজতে স্কুলের অফিস সহকারী দুর্জয় চৌধুরী নিহতের ঘটনায় সাবেক ওসি, প্রধান শিক্ষকসহ ৮ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাতে নিহতের বাবা কমল চৌধুরী বাদী হয়ে মৃত্যুর পাঁচ দিন পর চকরিয়া থানায় এই এজাহার জমা দেন। এ সময় কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের ১০–১২ জন আইনজীবী থানায় উপস্থিত ছিলেন।
এজাহারে চকরিয়া থানার সাবেক ওসি শফিকুল ইসলাম, এএসআই হানিফ মিয়া, দুই কনস্টেবল, চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম, দুই সহকারী শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে আসামি করা হয়েছে।
তবে, এজাহারটি এখনো নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি।
বাদী কমল চৌধুরীর দাবি, ‘তার ছেলে দুর্জয় চৌধুরী চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন। চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক ও অফিস সহায়ক তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য দুর্জয়ের ল্যাপটপে সংরক্ষিত ছিল, যা আড়াল করতেই তাকে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলে।’
‘গত ২১ আগস্ট রাত ১০টার দিকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে জোর করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওসি শফিকুল ইসলাম তাকে থানায় আটক রাখেন।’
‘পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক ও অন্য অভিযুক্তরা পুলিশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে গোপন আঁতাতে লিপ্ত হয় বলে অভিযোগ করেন বাদী। তাদের সম্মিলিত পরিকল্পনায় দুর্জয়কে থানার হাজতে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হয়।’
তবে পরিবারের দাবি, দুর্জয় আত্মহত্যা করেননি- তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের আইনজীবী ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট পিন্টু বড়ুয়া বলেন, ‘থানা হাজতে মৃত্যু কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমরা বাদীকে নিয়ে থানায় এজাহার দিয়েছি। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে মামলা হিসেবে রেকর্ড না হলে আদালতে এজাহার দায়ের করব।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন