শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ১১:৩৪ পিএম

বিলের মাঝেই আধুনিক শিক্ষা, ভাসছে প্রশংসায়

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ১১:৩৪ পিএম

বিলের মাঝেই অবস্থিত পংখারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বিলের মাঝেই অবস্থিত পংখারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম পংখারুয়া। চলনবিল অধ্যুষিত এ জনপদ বর্ষাকালে ডুবে থাকে জলরাশিতে। তখন নৌকা ছাড়া যাতায়াতের আর কোনো উপায় থাকে না। অন্য মৌসুমেও ভাঙাচোরা কাঁচা রাস্তাই একমাত্র ভরসা। এমন প্রতিকূল পরিবেশেও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে পংখারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

১৯৬৮ সালে আলহাজ ময়ান উদ্দিনের দানকৃত জমিতে ছনের ঘরে যাত্রা শুরু হয় বিদ্যালয়টির। শুরুর দিকে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি যেতেন। শিক্ষার্থীরা কখনো ডিঙি নৌকা, কখনো কলার ভেলা, আবার কখনো স্টিলের পাতিল ভাসিয়ে স্কুলে আসত। সেই অদম্য প্রচেষ্টার ফলেই আজ বিদ্যালয়টি রূপ নিয়েছে আধুনিক শিক্ষার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে।

অন্য এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘বর্ষায় কাদামাটি আর ভাঙাচোরা রাস্তায় স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। ড্রেস ময়লা হয়ে যায়, এতে পড়ালেখায় মনোযোগ নষ্ট হয়। ভালো রাস্তা হলে আমাদের জন্য সুবিধা হতো।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলেও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের কারণে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় আগ্রহী হচ্ছে। তারা খেলার ছলে শিখছে, তাই পড়ালেখায় বাড়তি চাপ মনে হচ্ছে না।’

পংখারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ছবি-  রূপালী বাংলাদেশ

বিদ্যালয়টির মান দেখতে উল্লাপাড়ার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আসেন। হেমন্তবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সোহেল রানা বলেন, ‘এখানে শিক্ষকের অনুপস্থিতিতেও শিক্ষার্থীরা শৃঙ্খলা বজায় রাখে। এটি আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত।’

বনবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা খাতুন বলেন, ‘অ্যাসেম্বলিতে শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল অংশগ্রহণ দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এখান থেকে শৃঙ্খলার বিষয়টি নিজের বিদ্যালয়ে প্রয়োগ করতে চাই।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে. এম. রহমতুল বারী জানান, ‘একসময় এই গ্রামে ১২০০ ভোটারের মধ্যে শিক্ষার্থী ছিল মাত্র ৫০ জন। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শিক্ষক সংকট নিরসন এখন সবচেয়ে জরুরি।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে এখানে কোনো রাস্তা ছিল না। এখনো বর্ষায় কাদায় ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব যেন দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা যায়। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও এই বিদ্যালয় যে মান ধরে রেখেছে, তা অনুকরণীয়।’

বর্তমানে বিদ্যালয়টি ৭ জন শিক্ষকের স্থলে মাত্র ৪ জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তারপরও বিদ্যালয়টি ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার মান ধরে রেখেছে। এর স্বীকৃতি হিসেবে প্রধান শিক্ষক ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন।

Link copied!