মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মনিরুজ্জামান মনির, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ০২:৩৩ এএম

জমি বরাদ্দ থাকলেও নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি টাঙ্গাইল আধুনিক বাস টার্মিনালের 

মনিরুজ্জামান মনির, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ০২:৩৩ এএম

আশি‍‍`র দশকে নির্মিত টার্মিনালে চলছে টাঙ্গাইলের বাসসেবা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

আশি‍‍`র দশকে নির্মিত টার্মিনালে চলছে টাঙ্গাইলের বাসসেবা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

আশি’র দশকে নির্মিত টার্মিনালে চলছে টাঙ্গাইলের বাসসেবা। বিগত এক যুগ আগে পৌরসভার মেয়র বাস টার্মিনালের সমিতির ভবন ও যাত্রী ছাউনি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন, সেই পরিত্যক্ত ভবনেই চলছে যাত্রীসেবা। গত তিন বছর আগে প্রায় পাঁচ একর সরকারি জমি বরাদ্দ পেলেও নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি আধুনিক বাস টার্মিনালের। বর্তমানে টাঙ্গাইল নতুন বাস টার্মিনালে যানবাহনের সংখ্যা অনেক, যায়গা সংকটের কারনে যানবাহনের চাপে রাস্তা বন্ধ হয়ে যানযটের সৃষ্টি হয়। এই যানযটের কারনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় চলাচলকারী বড় সংখ্যক পথচারীদের।

রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী জেলা টাঙ্গাইল। আয়তনের দিক থেকে ঢাকা বিভাগের সর্ববৃহৎ জেলা এবং জনসংখ্যার দিক থেকে ঢাকা বিভাগের ২য় সর্ববৃহৎ জেলা টাঙ্গাইল। এর আয়তন প্রায় ৩,৪১৪.৩৫ বর্গ কিলোমিটার। টাঙ্গাইলকে 'উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার' বলা হয়, কারণ এটি ঢাকা বিভাগের একটি অংশ এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক ব্যবহার করে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার যানবাহন দেশের অন্যান্য অংশের সাথে যুক্ত হয়। টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে, যা এটিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিতি এনে দিয়েছে।

কিন্তু টাঙ্গাইলে নেই কোনো আধুনিক বাস টার্মিনাল। নতুন বাস টার্মিনাল হিসেবে পরিচিত টাঙ্গাইল পৌরসভার দেওলা ও কোদালিয়া এলাকায় বাস টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে ৮০ দশকে। সময়ের ব্যবধানে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। হাজার হাজার মানুষ তাদের গন্তব্যে রওয়ানা দেয় এই বাস টার্মিনাল থেকে। এই নতুন বাস টার্মিনালের অবস্থা খুবই নাজেহাল। প্রয়োজনের তুলনায় যায়গা সংকট থাকার কারনে সব সময় যানযট লেগেই থাকে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন কর্মের উদ্দেশ্যে আসে জেলা শহরে। 

টাঙ্গাইল নতুন বাস টার্মিনালের পাশেই রয়েছে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল এবং টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। জেলা শহর ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে বড় সংখ্যক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে এখানে। নতুন বাস টার্মিনালে প্রতিনিয়ত যানযট লেগে থাকার কারনে রোগীদের যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। 

গত ২০২২ সালের জুলাই মাসের ৪ তারিখে এক লাখ এক টাকা মুল্যের দলিল মুলে টাঙ্গাইল পৌরসভা ৩০ বছর মেয়াদী  ৪.৯৪ একর সরকারি জমি লিজচুক্তি বন্দোবস্ত পায় আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ করার জন্য। যায়গাটি রাবনা বাইপাসের পাশেই অবস্থিত। দীর্ঘ সময় পার হলেও নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি আধুনিক বাস টার্মিনালের।

টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়,টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস মালিক সমিতির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৮০০ গাড়ি। প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ গাড়ি চলে জেলা শহরের বাস টার্মিনাল থেকে, বাকি ৪০০ গাড়ি চলে বিভিন্ন উপজেলা বাস টার্মিনাল থেকে।

এছাড়াও ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যটারীচালিত ইজিবাইকের আলাদা স্ট্যান্ড না থাকায় বাস টার্মিনালেই এসব যানবাহনের স্ট্যান্ড হিসেবেও রুপ নিয়েছে। ফলে দিন দিন যায়গা সংকট হয়ে যানযটের সৃষ্টি হচ্ছে। 

টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম লাভলু জানান, গত ১০ বছর আগে পৌরসভা থেকে এই বাস টার্মিনাল  পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেন। এরপর বাস টার্মিনালের মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন এবং যাত্রী ছাউনি হিসেবে ব্যবহৃত পরিত্যক্ত ভবনটি সংস্কার করা হয়নি। জেলার যানবাহনের সাথে সম্পৃক্ত মালিক, শ্রমিক সবারই কাম্য আধুনিক বাস টার্মিনাল। 

মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ইউসুফ আলী মিয়া (তরুন ইউসুফ) জানান, তার বাসা টাঙ্গাইল নতুন বাস টার্মিনালের পাশেই, প্রতিদিন কলেজে যাওয়া আসার সময় বাস টার্মিনালের রাস্তায় যানজটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় ৪০ মিনিট সময় বেশি লাগে কলেজে পৌঁছাতে।

এছাড়াও বাস টার্মিনালের কাছে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল এবং টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদেরও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বাস টার্মিনালের এই যানজটের কারণে।

তিনি আরও জানান, যানজটের কারণে ডেলিভারি রোগী বাস টার্মিনালেই বাচ্চা প্রসব করার ঘটনাও ঘটেছে। বাস টার্মিনালের আশেপাশের এলাকার শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ নিতে যাওয়ার সময়ও চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় এই যানযটের কারনে। আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে পরিকল্পিতভাবে যানবাহন চলাচল করলে এই যানজটের নিরসন হবে এবং পথচারিদের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে মনে করেন তিনি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পথচারী জানান, বাস টার্মিনালে এমনিতেই জায়গা সংকট, এখানে বাস রাখার পাশাপাশি এখানে ট্রাক, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের স্ট্যান্ডও হয়েছে।

এছাড়াও বাস টার্মিনালের উত্তর পাশে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে কাঁচাবাজার। এই বাজারের দোকানগুলো প্রায় রাস্তার উপরেই বসেছে, যে কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি হতে পারে মানুষের। অতিদ্রুত অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা এই কাঁচাবাজার অপসারণ করা দরকার বলে দাবি করেন প্রশাসনের কাছে। 

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার টাঙ্গাইলের উপপরিচালক মো. শিহাব রায়হান জানান, আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ করার জন্য টাঙ্গাইল পৌরসভার অনুকূলে সরকারি বরাদ্দ পাওয়া জমিতে মাটি ভরাট করার জন্য টেন্ডার হয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুতই মাটি ভরাট করে বাস টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!