ময়মনসিংহের নান্দাইলে রোপা আমন ধানখেতে দেখা দিয়েছে ইঁদুরের আক্রমণ। ইঁদুরের দল কৃষকদের স্বপ্নের আমন ধান গাছ কেটে সাবাড় করে ফেলছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় ইঁদুর দমনে আক্রান্ত জমিতে বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করেও প্রতিরোধ মিলছে না। তাই কৃষকরা বাধ্য হয়েই সনাতন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন। কেউ জমিতে ব্যবহার করছেন কলাগাছের খোসা, কেউ জমিতে টানিয়েছেন পলিথিন।
কৃষি বিভাগ বলছে, ধানখেতে ইঁদুরের আক্রমণ প্রতিরোধে তারা মাঠে কাজ করছেন এবং কৃষকদের নানারকম পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আবাদকৃত ধানের জমিগুলো বর্তমানে সবুজে ভরে উঠেছে। কিছুদিন পর ধান গাছ থেকে বের হবে থোর। এমন সময় খেতের কাঁচা ধানে ইঁদুরের আক্রমণ শুরু হওয়ায় যেন কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ হতে চলেছে। কাঁচা ধানের গাছ ইঁদুর কেটে দেওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
উপজেলার বীরবেতাগৈ ইউনিয়নের বীরকামট খালী গ্রামের কৃষক সুলতান খান, মনু খান, খারুয়া ইউনিয়নের কয়ারপুর গ্রামের শামসুল হক, রাজাপুর গ্রামের কৃষক বোরহান উদ্দিন, বীরবাগাইর গ্রামের আজিজুল, আচারগাঁও ইউনিয়নের হাবিবুর রহমানসহ অনেকেই জানান, ধান খেতে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়েছে।
‘ধান কেটে সাবাড় করে ফেলছে। হাট-বাজার থেকে বিভিন্ন কীটনাশক দিয়ে ইঁদুর দমন করতে পারছি না।’
খারুয়া ইউনিয়নের কয়ারপুর গ্রামের কৃষক শামসুল হক বলেন, ‘আমার ৪০ শতক জমির ধান ইঁদুরে কেটে সাবার করে ফেলছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না।’
বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের সুলতান খান বলেন, ‘আমি ১০ কাঠা জমিতে ধান রোপন করেছি। বেশিরভাগ জমির ধান ইঁদুরে কেটে ফেলছে।’
আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার ৫০ শতক জমির ধান ইঁদুর কেটে নষ্ট করে ফেলছে।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘ইঁদুরের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য কৃষকদেরকে ধানের জমিতে বিলি করে দিতে, জমিতে কলাগাছের খোসা দিতে এবং ইঁদুরের গর্তের মুখে কীটনাশক ও গ্যাসের ট্যাবলেট দিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে ইঁদুর দমন হবে বলে আশা করা যায়।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘আমন ধান খেতে ইঁদুরের আক্রমণ প্রতিরোধে আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। ইঁদুর নিধনেও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আশা করি কৃষক ইঁদুর থেকে অনেকটাই রেহাই পাবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন