মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলায় নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজবাড়ীর পাংশা থেকে গোয়ালন্দ পর্যন্ত পদ্মা নদীর ৫৭ কিলোমিটার এলাকায় অবাধে মা ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। পদ্মাপাড়ে অস্থায়ী হাট বসিয়ে প্রকাশ্যেই এসব মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসছেন সস্তায় ইলিশ কিনতে।
জেলেদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি সহায়তা দেওয়ার কথা থাকলেও তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অধিকাংশ জেলে। আবার যারা পাচ্ছেন, তাদের দেওয়া সহায়তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এ কারণে পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে নদীতে নামছেন তারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজবাড়ীর ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাট, গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের অন্তারমোড় থেকে দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়ালজানি, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের কলাবাগান ও উজানচর ইউনিয়নের চর করনেশন এলাকার পদ্মাপাড়ে অস্থায়ী হাট বসেছে। জেলেরা নদী থেকে ইলিশ শিকার করে এনে এসব হাটে বিক্রি করছেন। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসেছেন ইলিশ কিনতে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় এবং ছোট (জাটকা) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে। তবে এ সময় নদীতে মৎস্য বিভাগের কাউকে অভিযান চালাতে দেখা যায়নি।
রাজবাড়ী থেকে মাছ কিনতে আসা শামিম শেখ বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে যে মাছের দাম ২৫০০ টাকা কেজি, সেই মাছ এখন জেলেরা অর্ধেক দামে বিক্রি করছেন। তাই এখান থেকে সস্তায় কয়েক কেজি মাছ কিনেছি।’
জেলে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘রাজবাড়ীতে প্রায় ১৪ হাজার জেলে রয়েছেন। কিন্তু সরকার চাল সহায়তা দিয়েছে মাত্র ৪ হাজার জনকে—তাও মাত্র ২৫ কেজি করে। আমরা অধিকাংশ প্রকৃত জেলেই এই সহায়তা পাইনি। তাই পেটের তাগিদে বাধ্য হয়েই জাল নিয়ে নদীতে নামতে হচ্ছে।’
এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালেও দৌলতদিয়া এলাকায় চলন্ত ফেরি ও লঞ্চে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীদের ডালায় করে ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুব উল হক বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে সব এলাকায় নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও মা ইলিশ রক্ষায় আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, সার্বক্ষণিক নদীতে থাকা সম্ভব নয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন