ময়মনসিংহের গৌরীপুরে একটি নকল ভেটেরিনারি ঔষধ কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে ২১টি আলাদা আইটেমের বিপুল পরিমাণ নকল ঔষধ জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) গৌরীপুর পৌর শহরের প্রধান সড়কের পাশে মাস্টারপাড়া মহল্লায় এই নকল ঔষধ কারখানার সন্ধান পায় গৌরীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
তারা জানায়, সলিড ফার্মাকেয়ার নামে এই কারখানায় বিপুল পরিমাণ ভেজাল ঔষধ তৈরি ও বাজারজাত করে খামারিদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। এই ঔষধ খাওয়ার পর উপজেলার অনেক গরু ও ছাগল অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
গৌরীপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চার লাখ টাকার নকল ঔষধ, উৎপাদন সরঞ্জাম, বিভিন্ন ঔষধের লেবেল ও প্লাস্টিক বোতল জব্দ করেন। পরে কারখানার মালিক মোজাব্বির হোসেন খানকে ১০ হাজার টাকার জরিমানা করে জব্দকৃত মালামাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।
অভিযুক্ত মোজাব্বির হোসেন খান উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়নের মুখুরিয়া গ্রামের মো. নুরুল হুদা খানের ছেলে। তিনি ভেটেরিনারি জাতীয় ঔষধ ক্রয়-বিক্রয়ের লাইসেন্স ব্যবহার করে অবৈধ এই কারখানাটি গড়ে তুলেছেন। অভিযানকালে কারখানার মালিক নকল ভেটেরিনারি ঔষধ উৎপাদনের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত ঔষধ বাজারজাত করার লাইসেন্স তার থাকলেও নিজে ঔষধ উৎপাদনের কোনো অনুমতি নেই।’
গৌরীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিহাব উদ্দিন জানান, ‘মাওহা ইউনিয়নে প্রায় তিন লাখ টাকা দামের একটি ষাঁড় গরু ভিটামিন জাতীয় ঔষধ খাওয়ার পর আমাদের সন্দেহ তৈরি হয়। পরে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি, ঔষধের লেবেল ঢাকা লেখা থাকলেও সলিড ফার্মাকেয়ার নামে কোম্পানির ঔষধটি মূলত গৌরীপুরে তৈরি হচ্ছে। কারখানায় কোনো কেমিস্ট নেই, ল্যাবরেটরি নেই। ড্রামে মিশানো হচ্ছে কেমিকেল। এখানে থেকে তারা সারাদেশে রপ্তানি করে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করলে দেখা যায়, ঔষধ উৎপাদনের কোনো লাইসেন্স নেই তাদের। তারা নকল ঔষধ তৈরি করে বাজারজাত করছে।’
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা বলেন, ‘সলিড ফার্মাকেয়ার ভেটেরিনারি ঔষধ উৎপাদনের কোনো অনুমতি নেই। তারা ভেজাল ঔষধ তৈরি ও বাজারজাত করছে, তাই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং জব্দকৃত ঔষধ ও উৎপাদন সরঞ্জাম আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন, সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, গৌরীপুর পৌরসভার খাদ্য পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম এবং গৌরীপুর থানা পুলিশের একটি দল।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন