গাজীপুরে মুসলিম নারী ধর্ষণ, খতিব মুহিবুল্লাহ সাহেবকে গুম করে হত্যার চেষ্টা, অ্যাডভোকেট আলিফকে আদালত চত্বরে নৃশংসভাবে হত্যা এবং সারা দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে ধর্মীয় সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জনতা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) জুমা নামাজের পর ঘিওর কেন্দ্রীয় মসজিদ (বড় মসজিদ) থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মুড়ি হাটা, সরিষা হাটা, মোহাম্মদ আলী সড়ক দিয়ে মুস্তাজ মার্কেটের সামনে প্রদক্ষিণ শেষে বিক্ষোভকারীরা বাসস্ট্যান্ডে এসে সমাবেশ করে।
উপজেলা কেন্দ্রীয় মসজিদ কুস্তা বন্দর জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মাওলানা মো. নিজামুদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন—আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে রিকশা মার্কায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মনোনীত এমপি প্রার্থী মুফতি হেদায়েতুল্লাহ।
সমাবেশের প্রথম বক্তা ছিলেন হিন্দু সনাতন ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে আসা নওমুসলিম ঠাকুরকান্দি আবু হুরাইরা (রা.) মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি মুহাম্মদ আলী। তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এটা আমাদের মুসলমানদের দেশ, এটা ভারত নয়। এই বাংলাদেশে থাকতে হলে মুসলিম হিসাবে ধর্ম ঠিক রেখে থাকতে হবে। আমার সোনার বাংলায় ইসকনের কোনো ঠাঁই হবে না। ইসকন একটি সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী সংগঠন। এখানে থাকতে হলে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ সহ্য করা হবে না।’
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন: হিন্দু সনাতন ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত আরেক নওমুসলিম উম্মে সালমা, মাদ্রাসার শিক্ষক মো. খুবাইব, থানা মসজিদের ইমাম মুফতি মুহাম্মদুল্লাহ বাবু, আব্দুল্লাহ, আমির হামজা প্রমুখ।
এ সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জমান মানিক, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. মাসুদুর রহমান মাসুদসহ বিএনপির দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি ও অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ। সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবাই মিলেমিশে বসবাস করে। কিন্তু ইসকন নামের এই সংগঠনকে আশ্রয় দিচ্ছে ভারত এবং দেশের ভিতরে লুকিয়ে থাকা কুচক্রীরা; তারা নিজের ধর্মকে ছোট করে ইসলামের ওপর দিনের পর দিন আঘাত করছে। এ ছাড়া কিছু সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দলের নেতাদের সহযোগিতায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দিন দিন ইসলামের ওপর আঘাত করা হচ্ছে, যাতে ইসলামপন্থি দল মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। বক্তারা দাবি করেন, মুসলিমরা যদি অবিচার ও অত্যাচার সহ্য না করে, তাহলে এ দেশের মাটিতে তাদের জায়গা থাকবে না। বাইরের দেশ হোক বা দেশের ভিতরে থাকা দালাল, প্রশাসনের কেউ যদি ইসকনের সাথে যোগে এমন কর্মকাণ্ড করে, তাদের আইনানুগ কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে—কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বক্তারা সরকারের কাছে ইসকন নিষিদ্ধের জোর দাবি জানান। সমাবেশ শেষে বাংলাদেশের মঙ্গল কামনায় এবং সকল মুসলিমের জন্য দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচী সমাপ্ত করা হয়।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন