শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম

চরের অর্থনীতিকে চাঙা করছে বিনা আবাদের কাশগাছ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

যান্ত্রিক কোলাহল আর ব্যস্ততার ভিড়ে মানুষ যখন একটু প্রশান্তির খোঁজে ছুটে যায় প্রকৃতির কাছে, তখন শরতের এ কাশফুলের ছোঁয়া নিতে চরাঞ্চলগুলোতে নামে প্রকৃতিপ্রেমীদের ঢল। তবে এই নরম, বাতাসে দুলে ওঠা ফুলের আড়ালেই লুকিয়ে আছে নদীপাড়ের হাজারো মানুষের জীবনের বাস্তব গল্প—অর্থনীতি, টিকে থাকার লড়াই আর পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর নির্ভরতা। বিনা আবাদে উৎপন্ন এই কাশগাছ বিক্রি করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন চরবাসী।

সরজমিন দেখা গেছে, কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে এখন কাশগাছ কাটার মৌসুম চলছে। বন্যার পানি নামার পর এসব চরজমিতে কোনো পরিচর্যা ছাড়াই জন্ম নেয় কাশগাছ। প্রকৃতির নিয়মে বেড়ে ওঠা এই গাছগুলোর ফুল ঝরে যাওয়ার পর কৃষকরা কেটে রোদে শুকিয়ে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছেন। কোনো প্রকার খরচ ও ঝামেলা ছাড়াই উৎপাদিত এই কাশই নদীপাড়ের মানুষের জীবিকা টিকিয়ে রাখার বড় ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, কাশ চাষে এক টাকাও খরচ করতে হয় না। আমরা শুধু কেটে শুকাই। বছরের এই সময়টাতেই হাতে কিছু টাকা পাই। বর্তমানে এই কাশগাছই আমাদের আয়ের উৎস।

শুধু জমির মালিক নয়—কাজহীন দিনমজুরদের কাছেও এ মৌসুম স্বস্তি বয়ে আনে। প্রতিটি শুকনো কাশের বোঝা আকারভেদে ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিবিঘা জমি থেকে কৃষকরা আয় করছেন গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। নদীভাঙন, কর্মহীনতা আর আর্থিক সংকটের মাঝেও এই আয় তাদের জন্য এক টুকরো নিশ্চয়তা।

খুলনা থেকে কাশগাছ কিনতে আসা মাইদুল ইসলাম বলেন, কুড়িগ্রামের অসংখ্য চরে প্রচুর পরিমাণে কাশগাছ জন্মায়। যা এ অঞ্চলের কেটে শুকিয়ে প্রস্তুত করার পর আমরা কিনে নিয়ে যাই। এ কাশগাছ দিয়ে পানের বড়জ তৈরি করেন পান চাষিরা। এ ব্যবসার মাধ্যমে ভালোই লাভবান হচ্ছি।

শামসুল নামের এক শ্রমিক বলেন, নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে নদী পারের অনেক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পরেন। তবে এই সময়টি কাশ গাছ কাটার পর নদীর পর কর্মমুখর হয়ে ওঠে। ফলে কয়েক মাস আমরা এখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহের পরিবারের ব্যায় মেটাই।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কাশ শুধু আয়ই দেয় না—চরের বালুময় জমিতে পলি ধরে রাখে। পরিবেশ ও মাটির জন্যও খুব উপকারী।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এই প্রাকৃতিক কাশগাছকে পর্যটন, হস্তশিল্প বা ওষুধ শিল্পে ব্যবহার করা গেলে আরও সম্ভাবনা তৈরি হবে। শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে নদীপাড়ের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ আসবে। বায়ুদূষণ কমাতেও কাশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!