রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মিঠু হাসান, বদলগাছী (নওগাঁ)

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০১:২১ পিএম

রঙিন আমের পর কমলা চাষে পলাশের বাজিমাত

মিঠু হাসান, বদলগাছী (নওগাঁ)

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০১:২১ পিএম

নিজ বাগানের কমলা ধরে আছেন তরুণ কৃষক পলাশ হোসেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নিজ বাগানের কমলা ধরে আছেন তরুণ কৃষক পলাশ হোসেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা সবুজ আর উর্বরতার জন্য পরিচিত এই জনপদে কৃষির ইতিহাস যেন প্রতিদিনই নতুন করে লেখা হচ্ছে। একসময় যেখানে ধান, সবজি আর নাক ফজলি আম ছিল কৃষকদের আয়ের প্রধান ভরসা, সেখানে এখন জেগে উঠেছে ফল চাষের নতুন সম্ভাবনা। আর সেই সম্ভাবনার মুখ হয়ে উঠেছেন উপজেলার তরুণ কৃষক পলাশ হোসেন।

বদলগাছী উপজেলার ভাতসাইল গ্রামের যুবক পলাশ হোসেন। ছোটবেলা থেকেই গাছ-গাছালি, মাটি আর বীজের প্রতি ছিল তার আলাদা টান। তাইতো চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেকার হয়ে যাওয়া এই ছেলেটি ভাবলেন এই মাটিকে আরও বেশি কিভাবে কাজে লাগানো যায়। সেই ভাবনা থেকেই শুরু তার আম চাষের যাত্রা। আধুনিক প্রযুক্তি, নিয়মিত পরিচর্যা আর নিজের পরিশ্রমে খুব অল্প সময়েই আম চাষে সফল হন তিনি। তার বাগানের আম বদলগাছী পেরিয়ে পৌঁছে যায় দেশের নানা প্রান্তে।

কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি পলাশ। আমের রঙিন সাফল্যের পর তার মাথায় আসে নতুন ভাবনা—কমলা চাষ। যদিও স্থানীয় অনেকেই সন্দেহ করেছিলেন, এই মাটিতে কি কমলা ফলবে? কিন্তু পলাশের আত্মবিশ্বাস ছিল অটুট। কৃষি অফিসের পরামর্শ ও নিজস্ব পরিকল্পনায় ২০ শতক জমিতে লাগান কমলার চারা।

আজ সেই বাগানে ঢুকলেই চোখে পড়ে সারি সারি সবুজ গাছ, তার ডালে ঝুলে থাকা গাঢ় কমলা রঙের ফল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে কমলার টক-মিষ্টি ঘ্রাণ। যেন বদলগাছীর মাঠে আরেকটি নতুন মৌসুমের জন্ম।

পলাশ হোসেনের বাগানের গাছে দুলছে কমলা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পলাশ বলেন, ‘আমরা এত দিন ধান আর সবজির ওপর নির্ভর করেছি। আমি চেয়েছি বদলগাছীর কৃষিতে নতুন কিছু যোগ করতে। কমলা সেই নতুন স্বপ্ন। এখন ফলন দেখে বুঝতে পারছি, সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল না।’

বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান তার প্রশংসা করে বলেন, ‘পলাশ হোসেন এই অঞ্চলে কমলা চাষকে জনপ্রিয় করার পথ তৈরি করেছেন। তার উদ্যোগ দেখেই অনেক কৃষক এখন কমলা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’

পলাশের বাগান এখন যেন এক অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণকেন্দ্র। প্রতিদিনই আশপাশের গ্রাম থেকে কৃষকরা তার বাগানে এসে ফল দেখছেন, চাষপদ্ধতি শিখছেন। কেউ আবার নিজেদের জমিতে কমলা চাষের পরিকল্পনা করছেন।

বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের এমদাদুল হক দুলু বলেন, ‘আমার বাড়িতে দুটি কমলা গাছ আছে, কয়েকটি ফল ধরেছে। আমি পলাশের বাগান দেখতে এসেছি, কেমন কমলা ধরেছে। এখানে এসে বিশ্বাসই করতে পারছিনা বদলগাছীর মাটিতে এত কমলা ধরেছে। কয়েকটি কমলা খেলাম স্বাদে দারুণ-সুমিষ্ট। খুব ভালো লাগলো।’

পলাশ হোসেনের কমলার বাগান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

একসময় যে বদলগাছী কেবল সবজির জন্য পরিচিত ছিল, সেই অঞ্চলে এখন ফল চাষের নতুন আলো ছড়াতে শুরু করেছে। এই আলো ছড়াচ্ছে একজন স্বপ্নবাজ তরুণ কৃষক পলাশ, তার পরিশ্রম আর নিরন্তর লড়াই থেকে। পলাশের গাছভরা কমলা শুধু ফল নয়, এ যেন বদলগাছীর কৃষির নতুন আশা, নতুন পথচলা।

বদলগাছীর বাতাসে আজ টক-মিষ্টি কমলার ঘ্রাণ। সঙ্গে মিশে আছে একটি গ্রামের ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়ার গল্প, রঙিন আমের পর কমলা চাষে সত্যিই বাজিমাত করেছেন পলাশ হোসেন।

Link copied!