বাগেরহাট সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ উপচে আশ্রয় প্রকল্প-১ এর আওতাধীন গুচ্ছগ্রাম ও আশপাশের লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ওই এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জোয়ারের তীব্রতা ও টানা বৃষ্টির কারণে যাত্রাপুরের গুচ্ছগ্রাম প্রায় প্রতিদিনই পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। রান্নাবান্না থেকে শুরু করে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজেও দেখা দিয়েছে চরম দুর্ভোগ।
বন্যার পানির কারণে আশ্রয়কেন্দ্রের ১১৯টি পরিবার ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন চর্মরোগ। প্রতিবছর একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো টেকসই ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। দুর্বল বেড়িবাঁধের কারণে প্রতিবছর জোয়ারের সময় এমন দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয় স্থানীয়দের।
গুচ্ছগ্রামের শতাধিক শিশু পানিবন্দি হয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। আশ্রয়কেন্দ্রে শুরুর দিকে ১১৯টি পরিবার থাকলেও বর্তমানে ৭০-৮০টি পরিবার রয়ে গেছে। তারাও ভাবছে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করার কথা।
আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা তহমিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিবছরই একই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে টেকসই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুর্বল বেড়িবাঁধ মেরামতের বদলে শুধু আশ্বাসই মিলছে।’
মাজেদা বেগম বলেন, ‘ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। রান্না করবার জায়গা নেই। পোলাপান স্কুলে যেতে পারে না, শরীরে ঘা উঠছে পানির কারণে।’
স্থানীয় বাসিন্দা হাসান মাহমুদ জসীম জানান, ‘প্রতিবছরই এই সমস্যায় ভোগে গুচ্ছগ্রামের মানুষ। এখানে পঞ্চাশেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে, যারা এখন স্কুলে যেতে পারছে না। বেড়িবাঁধ নিচু ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সারা বছরই জলাবদ্ধতা লেগে থাকে।’
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস. এম. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। নদীর পানির স্তরের তুলনায় আশ্রয় প্রকল্পের জায়গাটি নিচু হওয়ায় জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। সেখানে বালু ভরাট করে উঁচু করার পাশাপাশি বেড়িবাঁধ উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
স্থানীয়রা দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ এবং কার্যকর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন :