বরিশালে গৃহবধূকে দল বেঁধে ধর্ষণের মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৬ অক্টোবর) বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম ৯ বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন: নগরীর রূপাতলী ধান গবেষণা রোডের বাসিন্দা মানিক গাজী কালুর ছেলে রাসেল গাজী (৪৪), রূপাতলী গ্যাসটারবাইন এলাকার ভাড়াটিয়া ও বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী খানের ছেলে খোকন খান (৩২), ধান গবেষণা রোড খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা খলিল জমাদ্দারের ছেলে রাজিব জমাদ্দার (৩৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার (৩৫)।
রায় ঘোষণার সময় খোকন খান আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি পলাতক। বাকি তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বরাতে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুল মন্নান মৃধা বলেন, ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ধান গবেষণা রোডের বাসিন্দা ১৯ বছর বয়সি এক গৃহবধূ তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর অটোরিকশায় করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকা স্বামীর উদ্দেশে রওনা দেন। অটোরিকশা চালক তাকে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে ভুল পথে নগরীর ত্রিশ গোডাউন ব্রিজের ওপর নিয়ে যান। সেখানে ওই গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে খ্রিষ্টান পাড়া এলাকায় জঙ্গলে নিয়ে যান। পরে দণ্ডিত চারজনসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮ থেকে ১০ জন রাতভর পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করেন। ভোর রাতে একটি বাড়ির সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় গৃহবধূকে ফেলে যান। পরে ওই বাড়ির অজ্ঞাত ব্যক্তিও তাকে ধর্ষণ করে। সকালে স্থানীয় কয়েক নারী-পুরুষ ওই নারীকে সেখানে পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু তারা তার কথা বিশ্বাস না করে তাকে মারধর করে ফেলে চলে যান। তখন ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বোরখা পেয়ে সেটি পরে বাড়িতে যান।
এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ। তদন্ত শেষে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।
বিচারক ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় দিয়েছেন বলে আদালতের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানান।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন