বগুড়ায় ১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান এক বাবা। এরপর ওই বাবাকে তুলে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অবশেষে মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মো. রাজু শেখ (৪০) র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
রোববার (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গুলশানের নিকেতন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১২, বগুড়া সিপিএসসি-র কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম আবুল হাশেম সবুজ।
জানা গেছে, বগুড়া সদর থানাধীন ফুলবাড়ী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সেকেন্দার আলী সরকারের ছেলে মো. জিতু সরকার (৪৩) দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার ১৪ বছর বয়সী সুরমীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু মেয়ের বাবা, অটোচালক শাকিল তাতে রাজি না হওয়ায় সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে।
গত ১৪ জুন দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে শাকিল যখন শীববাটি শাহী মসজিদ রোডের ইন্দীরার পার নামক স্থানে একটি মুদি দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন, তখন ১ নম্বর আসামি জিতু সরকারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
শাকিল প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে নিজ বাড়িতে আশ্রয় নিলেও দুপুর ২টার দিকে ৫-৬টি মোটরসাইকেলে করে ওই সন্ত্রাসীরা আবারও হাজির হয়ে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।
পরে তাকে ফুলবাড়ী মৃধাপাড়া এলাকায় করতোয়া নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ১৭ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকে র্যাব-১২, সিপিএসসি বগুড়া অভিযুক্তদের ধরতে গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার ২ নম্বর পলাতক আসামি রাজু শেখ ঢাকার গুলশান থানাধীন নিকেতন এলাকায় অবস্থান করছেন।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১২-এর অধিনায়কের দিকনির্দেশনায়, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর সহায়তায় ২০ জুলাই রাত ১০টা ২০ মিনিটে গুলশানের নিকেতন এলাকার রোড নম্বর ৩, বাসা নম্বর ২২-এর সামনে অভিযান চালিয়ে রাজু শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত কৃত রাজু শেখ বগুড়া সদর উপজেলার শিববাটি ঘোড়াপাড়া গ্রামের মো. সলু শেখের ছেলে। তাকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।