দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামসুন্নাহার এখনো বহাল রয়েছেন। এলাকাবাসী মনে করছেন, কোনো ‘অদৃশ্য শক্তির’ আশ্রয়ে তিনি এ পদে বহাল আছেন।
এ নিয়ে রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড চত্বরে উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি ওমর ফারুকের সঞ্চালনায় ‘অন্যায় প্রতিরোধ কমিটি’র ব্যানারে গ4ণজমায়েত ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাবেক উপজেলা সভাপতি আব্দুল হামিদ।
গণজমায়েতে গুনাহার ইউপি চেয়ারম্যান ও জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য প্রার্থী নূর মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন, ‘দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. শামসুন্নাহার কর্তৃক রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্নীতি এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, ইতোমধ্যে ১৭ জন মেডিকেল অফিসার ও নার্সরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অধিকাংশ স্টাফ তার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এর আগে এ উপজেলায় আসেননি। তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বগুড়া জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাজাহান আলী তালুকদার বলেন, ‘যোগদানের পর থেকেই ডা. শামসুন্নাহার ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় টেন্ডার বাণিজ্য, ডাক্তার-স্টাফদের হয়রানি, হাসপাতালের মসজিদে হস্তক্ষেপসহ বহু অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এক অদৃশ্য খুঁটির জোরেই তিনি এখনো বহাল রয়েছেন। তাকে দ্রুত প্রত্যাহার করে নতুন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।’
দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি গাজিউর রহমান বলেন, ‘ডা. শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে সাবেক টিএসও রেখে যাওয়া ব্যাংকের ৩ লাখ টাকা, করোনাকালে ১৫ লাখ টাকা, আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ২.৭৫ লাখ টাকা, শ্রান্তি ভাতা ১.৪৫ লাখ টাকা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খাতে ১৮ লাখ টাকা, কোয়ার্টারের ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল, অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি খরচ, এমনকি মসজিদের টাকা আত্মসাৎসহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।’
বক্তব্য রাখেন অন্যায় প্রতিরোধ কমিটির সহসভাপতি অধ্যক্ষ আবুল বাশার, পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল জলিল, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ইউনুছ আলী মহলদার মানিক, মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক আলমসহ আরও অনেকে।
এর আগেও গত ২৭ আগস্ট একই স্থানে ডা. শামসুন্নাহারের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরুখ খানের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সমাবেশ শেষে আয়োজকরা তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ঘোষণা দেন। এই সময়ের মধ্যে ডা. শামসুন্নাহারকে অপসারণ না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে জানান তারা।