চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার হারুয়ালছড়ি খালের ওপর নির্মিত বেইলি সেতুটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বেইলি সেতুর শিটগুলো মরিচা ধরে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে হালকা যানবাহন চলাচল করলেও প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এমনকি এই সেতু দিয়ে মানুষ চলাচল করলেও প্রায়ই নদীতে পড়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই উপজেলার লম্বাবিল-লট সুজানগর সড়কে সেতুটির বিভিন্ন স্থানে লোহার পাটাতন আলগাভাবে বসানো রয়েছে। কোথাও পাটাতন মরিচায় নষ্ট হয়ে গেছে, আবার কোথাও বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। ট্রলি, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল সেতুতে উঠলে সেটি কাঁপে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, সেতুটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হলেও এখন পর্যন্ত সেটি মেরামত কিংবা সেখানে নতুন সেতু নির্মাণে কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন হারুয়ালছড়ির লট সুজানগর, ক্ষিতিং পাড়া, হাতীয়া কুম, বড়ধারী ও বদৈল্যারখীল একালার অন্তত ২০ হাজার মানুষ। ৪০ বছর আগে নির্মিত এ সেতু গত কয়েক বছর ধরে এভাবে পড়ে আছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে বেইলি সেতুটি সংস্কারে দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার- এমন প্রত্যাশা বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মো. সাত্তার জানান, প্রায়ই সেতুর লোহার পাত খুলে নদীতে পড়ে যায়। পরে সেগুলো উঠিয়ে কোনোমতে লাগিয়ে দেওয়া হয়। বছর দুয়েক আগে এক স্কুলছাত্রী সেতু পার হতে গিয়ে নদীতে পড়ে যায়। এমন দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
পথচারী শান্তিরহাট গ্রামের ব্যবসায়ী মো. সুমন বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রতি বস্তায় পরিবহন খরচ পাঁচ টাকা বেড়ে যায়।

হারুয়ালছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল চৌধুরী বলেন, এই সেতু দিয়ে লটসুজানগর, ক্ষিতিং পাড়া সহ এলাকার হাজারো মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। ইতিমধ্যে এলজিডি'র কয়েকটি প্রকল্পে নাম প্রস্তাব করা আছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) ফটিকছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, হারুয়ালছড়ি খালের দক্ষিণ পাশের মানুষে যাতায়াতের জন্য রাস্তাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেতু পাটাতনে মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। সেতুর কিছু কিছু অংশে মরিচা ধরে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে কোমলমতি স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। এমতাবস্থায় সেখানে নতুন সেতু নিমার্ণে সুপারিশ করা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে সেতুটির কাজ সবচেয়ে আগে করা হবে।