ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন, ২০২৫

দেশের শান্তি চাই, দুটি সন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
ভুক্তভোগী নারী ও অভিযুক্ত ফজর আলী। ছবি- সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরের বাহেরচর পাঁচকিত্তা এলাকায় এক নারীকে নিপীড়নের অভিযোগে করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ফজর আলীর বিরুদ্ধে নিজের দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী নারী।

ভুক্তভোগী নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, ‘হের (ফজর আলী) তো অবস্থা খারাপ। বাঁচে না মরে বলা যায় না। সে যদি এলাকায় হাঁটা-চলা করত তাহলে মামলা করে কাজ হতো। এখন ওর মরার অবস্থা। আমরা মামলাটা উঠাতে চাই, দেশকে শান্তিতে রাখতে চাই। দুটি সন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই।

ওই নারী জানিয়েছেন, তাকে কেউ চাপ দেয়নি বা টাকার লোভ দেখায়নি।

বরং স্বামী বলেছেন, তোর সম্মান যা যাওয়ার গেছে, এখন কেস করলেও সেই সম্মান ফিরে পাবি না।

ওই নারী বলেন, আমি মামলা করেছি, আমি তুলে ফেলব। আমি দশজনের ভালো চাই।

ফজর আলীর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি জানান, তার মা ফজরের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। পাওনা টাকার বিষয়েই মাঝে মাঝে ফজর আলী ফোন করতেন। তবে ফজরের ছোট ভাই তাদের সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করতেন। একপর্যায়ে তিনি এসে নারীর মোবাইল কেড়ে ভেঙে ফেলেন। পরে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয়।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে ফজর আলী তাদের ঘরের সামনে এসে দরজা খুলতে বলেন।

তিনি জানান, ঘরে তিনি এবং তার দুই সন্তান ছিলেন, বাবা-মা পূজার অনুষ্ঠানে পাশের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ওই সুযোগে ফজর আলী ঘরে ঢুকে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন।

কিছুক্ষণ পর এলাকার ৭-৮ জন লোক ঘরে ঢুকে ফজর আলীকে মারধর করেন। পরে তারা ভুক্তভোগী নারীকেও মারধর করেন এবং পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার ফজর আলীকে প্রধান আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। মামলার পর পুলিশ ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার অন্য চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ভিডিওটি ধারণ ও অনলাইনে ছড়িয়েছেন। এ ঘটনায় রোববার (২৯ জুন) পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক একটি মামলাও দায়ের করা হয়, যেখানে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ভাইরালকাণ্ডে জড়িত গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- একই এলাকার আবদুল হান্নানের ছেলে মো. আলী সুমন, জাফর আলীর ছেলে রমজান, মো. আলমের ছেলে আরিফ ও তালেম হোসেনের ছেলে অনিক। 

কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান জানান, পুরো বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ফজর আলী বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছাড়পত্র পেলে তাকেও আদালতে তোলা হবে।