কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে স্বামীর সহযোগিতায় এক ইটভাটার নারী শ্রমিককে আটক রেখে তিন দিন ধরে ধর্ষণ করেছে স্বামীর অপর তিন বন্ধু। এঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশানী ইসলামিয়া ইটভাটায়।
তথ্যটি শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ধর্ষিতার স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহাম্মেদ (২৬), ধর্ষণকারী একই এলাকার মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে হৃদয় (২৫), চান মিয়া মাঝির ছেলে মহিন (২৬), একই উপজেলার মুন্সিতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)।
ধর্ষনের শিকার নারী মামলায় উল্লেখ করেন, তার স্বামী রাজুর সাথে ২০২৩ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর জানতে পারে রাজু একজন মাদকাসক্ত। এই নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। চলতি মাসে প্রথম দিকে রাজু পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে সালিশ সভায় আর নেশা করবে না বলে স্ত্রীকে কথা দেয়। আগামী দিনে তারা মিলেমিশে সংসার করবে বলেও জানায়।
স্বামীর আশ্বাসে গত ১৫ অক্টোবর স্বামী রাজু তার স্ত্রীকে কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশানী ইসলামিয়া ইটভাটায় নিয়ে আসে। সেখানে তারা শ্রমিক হিসাবে কাজ নেয়। এসময় তাদের থাকার জন্য অভিযুক্ত বেলালের সহযোগিতায় একটি ঘর ভাড়া নেয়। ১৬ অক্টোবর রাত ১০টায় অভিযুক্ত বেলাল ও আবুল কাশেম তাদের ঘরে প্রবেশ করে। এসময় তার স্বামী ঘরে ছিল। বেলাল ও কালাম রুমে প্রবেশ করার পর কিছুক্ষণ পর তার স্বামী তার মুখ চেপে ধরে এই পর্যায় বেলাল তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে।
অভিযোগে ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, লাজলজ্জার কারণে তিনি বিষয়টি কাউকে জানাননি। ১৮ অক্টোবর অপর অভিযুক্ত হৃদয় ও মহিন উদ্দিন তাদের ঘরে প্রবেশ করেন। এসময় তার স্বামী উপস্থিত ছিলেন। পূর্বের একই কায়দায় স্বামী তার স্ত্রীর মুখ চেপে ধরে এবং হৃদয় ও মহিন উদ্দিন তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ২০ অক্টোবর রাতে একই কায়দায় অভিযুক্ত হৃদয় আবারও তার ঘরে প্রবেশ করে এসময় তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার চিৎকারে হৃদয় পালিয়ে যায়।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগী নারী শুক্রবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করে। আমরা আজ (শনিবার) ভোরে ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগীর নারীর স্বামী রাজুসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করি। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আর অভিযুক্তদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
