দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
তৃতীয় ইউনিটের গভর্নর ভাল্ব স্টিম সেন্সরের চারটি টারবাইন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়।
২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটটি চালু অবস্থায় প্রতিদিন গড়ে ১৬০ থেকে ১৬৫ মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করত। ইউনিটটি চালু রাখতে প্রতিদিন এক হাজার ৬০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হতো। ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিনাজপুর ও রংপুর অঞ্চলের বিদ্যুতের লোডশেডিং দেখা দিয়েছে।
বর্তমানে ১২৫ মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিট দিয়ে প্রতিদিন ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে। এই ইউনিট চালু রাখতে প্রতিদিন ৮০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হচ্ছে।
একইভাবে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ২ নম্বর ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ওভারহোলিং কাজের জন্য বন্ধ রয়েছে। চালু অবস্থায় এ ইউনিট থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এতে করে দীর্ঘ ৪ বছর ৮ মাস ধরে ২ নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট স্বাভাবিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলে প্রতিদিন ৫ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হতো। কিন্তু শুরু থেকে এ পর্যন্ত তিনটি ইউনিট এক সঙ্গে চালু রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি।
তিনটি ইউনিট পুরোপুরি চালু না থাকায় পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কোল ইয়ার্ডে প্রতিদিনই কয়লার মজুত বাড়ছে। বর্তমানে কোল ইয়ার্ডে ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত রয়েছে বলে খনি সূত্রে জানা যায়। তবে প্রতিদিন খনির উৎপাদিত কয়লার তিন হাজার মেট্রিক টন কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হচ্ছে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লার ওপর নির্ভর করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রেটি নির্মাণ করা হলেও কয়লা সরবরাহ কম হওয়ায় কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুত দিন দিন বাড়ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিট বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, তৃতীয় ইউনিটের গভর্নর ভাল্ব স্টিম সেন্সরের চারটি টারবাইন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ইউনিট চালুর জন্য মেরামত চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে চীনা বিশেষজ্ঞদের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইউনিট চালুর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।