ঢাকা শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর, ২০২৫

গাজীপুরে শাল-গজারি পাচারকালে ট্রাক জব্দ

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ০৯:১৪ পিএম
কাপাসিয়ার দরদরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাল-গজারি গাছ ভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করেছে বন বিভাগ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছয়টি রেঞ্জের অধীনে ২৮টি বিট নিয়ে ঢাকা বনবিভাগ। এর মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুর রেঞ্জাধীন গোসিংগা বিটের অধীনের কাপাসিয়ার দরদরিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাল-গজারি গাছ ভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করেছে বন বিভাগ।

গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া এলাকা থেকে অবৈধভাবে পাচারের উদ্দেশ্যে শাল-গজারি গাছ একটি ট্রাকে লোড হওয়ার খবর পেয়ে, বৃষ্টি ভেজা রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান চালিয়ে ২৫ ফুট লম্বা ৭০ পিস গজারি গাছ ভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করে গোসিংগা বিট অফিসে নিয়ে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান।

রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানান, ‘বনদস্যুরা দিন-কে দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এরা প্রকৃতির ভারসাম্য বিনষ্ট করছে। রাতের অন্ধকারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধভাবে পাচারের উদ্দেশ্যে সবুজ বন উজাড় করছে বন খেকোরা। সবুজ বন আমাদের অক্সিজেন দেয়। এরা অক্সিজেনের কারখানাকে ধ্বংস করছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পারমিটবিহীন জোতভূমি থেকে কেটে আনা ৭০ পিস শাল-গজারি ভর্তি (ঢাকা মেট্রো-ট, ১৫-৯৭৩৩) সিরিয়ালের একটি ট্রাক জব্দ করে গোসিংগা বিট অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি মাদক মামলাসহ একাধিক বন মামলার আসামি হারুন সিকদার ৭০ পিস শাল-গজারি গাছ ট্রাকযোগে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে গজারি গাছ ভর্তি ট্রাকটি জব্দ করেছেন রেঞ্জ কর্মকর্তা। এর আগে, জুলাই আন্দোলনের পর পহেলা মার্চ দিবাগত রাতে রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশনায় ৫০৭ দাগের সরকারি বন থেকে কেটে আনা ৭০ পিস সরকারি বনের গাছ ভর্তি (ঢাকা মেট্রো-ট, ১৫-৯৯০৬) সিরিয়ালের একটি কাবারভ্যান জব্দ করে গোসিংগা বিট অফিসে নিয়ে যান গোসিংগা বিট ফরেস্টার হাবিবুর রহমান। কিন্তু তখন অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময় সরকারি ও বেসরকারি সবুজ বন অবৈধভাবে কেটে বহুসংখ্যক শাল-গজারি গাছ পাচার করেছেন হারুন সিকদার, ওরফে বনদস্যু ফ্যাসিস্ট দোসর হারুন।

একাধিক স্থানীয় জানান, হারুন সিকদার আওয়ামী ফ্যাসিস্টের দোসর। তার বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলাসহ কয়েকটি বন মামলা রয়েছে। মাদক মামলায় জেলও খেটেছেন। কার নেতৃত্বে এখনো সে গজারি গাছের অবৈধ ব্যবসা করছে? তাকে কে লিড দিচ্ছেন? তবে তারা জানিয়েছেন অন্তরালে সম্ভবত প্রভাবশালী মহলের কেউ তাকে লিড দিচ্ছেন। এ জন্য তিনি ফ্যাসিস্ট হওয়া সত্ত্বেও সাহসের সঙ্গে সবুজ বন উজাড় করেছেন এবং শাল-গজারি গাছ পাচার করেছেন। দেশ থেকে সকল ফ্যাসিস্ট পালিয়ে গেলেও তিনি দিব্যি ঘুরছেন। ফ্যাসিস্টের আমলে সোহেল তাজ ও তার বোন সিমিন হোসেন রিমি ভয় দেখিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় অনেককে হয়রানি করেছেন এই হারুন সিকদার।

তার ভাই রেহান উদ্দিন সিকদার মোবাইল ফোনে এক কথোপকতনে জানান, হারুন মদ খেয়ে আবল তাবল করেন, কখন কাকে কী বলে নিজেও জানেন না। মাতাল থাকেন সবসময়। কল রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে। অনেকেই বলেন, দৈনন্দিন রুটিনমাফিক মদ্যপান করে হারুন।

অভিযান পরিচালনায় গোসিংগা বিট ফরেস্টার হাবিবুর রহমান ও অন্যান্য স্টাফরা সহযোগিতা করেছেন বলে রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানিয়েছেন।