জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চিরকুট লিখে মেহেদী হাসান আপন (১৬) নামে এক কিশোর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত ৯টার দিকে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া গ্রামে নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন তিনি।
নিহত মেহেদী হাসান আপন বয়ড়া ইসরাইল আহমেদ উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র ও বয়ড়া গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক শিপন মিয়ার ছেলে।
জানা গেছে, রাতের খাবার খেয়ে দাদার ঘরে কিছু সময় কাটিয়ে নিজের ঘরে চলে আসেন আপন। দীর্ঘ সময় সাড়া না পেয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন তার মা। দরজা না খুললে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পাশেই পড়ে ছিল দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুট।
চিরকুটে লেখা ছিল
‘শুরুতেই বলি সালাম নিবেন। আমি আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি, ক্ষতি করেছি, খারাপ ব্যবহার করেছি। আমি ছোট থেকেই খারাপ, নিজেকে কখনো ভালো করতে পারিনি। বাবার কথা রাখতে পারিনি, তার মনে অনেক কষ্ট দিয়েছি। বাবা, আপনার পা দুটি ধরে মাফ চাইতে পারলাম না। আমাকে মাফ করে দিয়েন। মা, তুমি আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছো, অনেক বুঝিয়েছ; তবুও ভালো হতে পারলাম না। দাদার সম্মানও আমার জন্য হারিয়ে গেছে। আমি সবার মনে কষ্ট দিয়েছি। বন্ধুদের বলি, তোদের সঙ্গে কত আড্ডা, কত আনন্দ করেছি। আমার কোনো কথায় কিছু মনে করিস না। আমার জানাজায় আসিস, আমার কবরে মাটি দিবি। আমার কাছে যদি কেউ টাকা পেয়ে থাকে, তবে আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি ভালো হতে পারিনি, তাই নিজেই পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছি। আপনারা ভালো থাকবেন। আপনাদের খারাপ সন্তান আর নেই। ইতি- আপনাদের খারাপ ছেলে, আপন।’
এ বিষয়ে আপনের ছোট বোন আছিয়া বলেন, ‘ভাইয়া রাতে খাবার খেয়ে দাদার ঘরে গিয়েছিল। পরে নিজ ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। মা ডাকলেও কোনো সাড়া দেয়নি। দরজা ভেঙে দেখি ভাইয়া ঝুলে আছে।’
এ ঘটনায় সরিষাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদ মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করি। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা চিরকুটে আত্মহত্যার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :