সরকার ঘোষিত চাল আমদানির সময়সীমা শেষ হয়েছে ৩০ নভেম্বর। ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে গত ৫৫ দিনে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে ১৮ হাজার ১১ টন চাল।
গত ২১ আগস্ট ৯টি ট্রাকে ৩১৫ টন চাল নিয়ে প্রথম চালান বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। ২১ আগস্ট থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১০০ দিনের মধ্যে ৫৫ দিনে ১৫৫টি চালানের বিপরীতে ৫৮০টি ট্রাকে করে মোট ১৮ হাজার ১১ টন চাল বেনাপোল বন্দরে এসেছে।
দেশে চালের অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার সব বন্দর দিয়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়।
আগস্ট মাসে ১ হাজার ২৬০ টন, সেপ্টেম্বরে ৫ হাজার ৪৩৫ টন, অক্টোবরে ৫ হাজার ১৮৮ টন এবং নভেম্বরে ৬ হাজার ১২৮ টন চাল আমদানি হয়।
আমদানিকৃত চাল খালাসের জন্য বেনাপোল কাস্টম হাউসে চার থেকে পাঁচটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কাজ করছে। বন্দরের ৩১ নম্বর শেডে আমদানিকৃত চালের খালাস কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
বেনাপোল বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী মুছা করিম স্টোরের হাফিজুর রহমান জানান, ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হওয়ার পর চালের দাম কমেছে। সব ধরনের চাল কেজিপ্রতি কমপক্ষে ৩-৪ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আমন ধানের চাল বাজারে এলে দাম আরও কমবে।
বর্তমানে বেনাপোল ও শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে আমদানিকৃত ভারতীয় স্বর্ণা-৫ জাতের চাল কেজিপ্রতি ৪৮-৫০ টাকা এবং শম্পা জাতের চাল ৬৬-৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশীয় নতুন স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৭-৪৮ টাকা কেজিতে। তবে নতুন আমন ধানের চাল এখনো পুরোপুরি বাজারে আসেনি।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি বাবলু রহমান বলেন, চাল আমদানির শুরু থেকেই আমরা কাস্টম হাউসে খালাস কার্যক্রম পরিচালনা করছি। অধিকাংশ চাল ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে খালাস করা হয়েছে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক অনু জানান, শুরুতে চাল আমদানির পরিমাণ বেশি থাকলেও মাঝের দুই মাসে কিছুটা কমে যায়। তবে সময়সীমার শেষের দিকে আমদানি আবার বেড়ে যায়। বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চাল আমদানির কারণে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। আমন ধানের চাল বাজারে এলে দাম আরও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল শেষবার চাল আমদানি হয়েছিল। পরে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেয়ে ২১ আগস্ট থেকে পুনরায় আমদানি শুরু হয়।
বেনাপোল উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার নাথ জানান, ৩ মাস ১০ দিনে ১৫৫টি চালানে ৫৮০টি ট্রাকে মোট ১৮ হাজার ১১ টন চাল আমদানি হয়েছে। ৩০ নভেম্বর নির্ধারিত শেষ দিনে ৬ হাজার ১২৮ টন চাল আসে। নতুন করে সময় বাড়ানোর কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও জানান, আমদানিকৃত চাল দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে খালাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


