ঝিনাইদহ শহরের কে পি বসু সড়কের একটি বাসা থেকে সুদীপ জোয়ারদার (৩৫) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। মরদেহের পিঠে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতের চিহ্নের কারণে তার মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। নিহত সুদীপ জোয়ারদার ওই এলাকার সুনীল জোয়ারদারের ছেলে।
শনিবার (৫ জুলাই) নিজ ঘরে তোয়ালে দিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় সুদীপের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বন্ধু, মামা ও স্থানীয়দের মতে, ঘটনাটি আত্মহত্যা নয় বরং একটি সুপরিকল্পিত হত্যার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
জানা যায়, ছোটবেলায় সুদীপের মা মারা যান। পরে তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সঙ্গে বেড়ে উঠলেও পরিবারে রয়েছে তার পালিত ভাই শিলন জোরদার। তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কও ছিল কিছুটা জটিল ও টানাপোড়েন পূর্ণ। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও সদালাপী সুদীপ এমনভাবে আত্মহত্যা করবে সেটি মানতে পারছেন না তার মামা ও বন্ধুদের কেউই।
নিহত সুদীপের বন্ধু ফাহাদ মাহমুদ মারুত বলেন, সুদীপ সবসময় হাসিখুশি থাকত। বাড়িতে সৎ মায়ের সাথে তার বিরোধ চলে আসছিল। মাঝে শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হলেও বাড়ি থেকে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করেনি। ওর আচার আচরণে কখনো এমনটি মনে হয়নি যে ও আত্মহত্যা করতে পারে। মৃত্যুর পর তার পকেটে দুটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়, যা আত্মহত্যার সময় থাকা সন্দেহজনক।
নিহতের ছোট চাচা তপন জোয়ারদার বলেন, বাবা, মা ও ছোট ভাইয়ের সাথে সুদীপের তেমন ভালো সম্পর্ক ছিল না। মাঝে মাঝে তাদের ঝামেলা হতো।
নিহতের ছোট মামা প্রশান্ত রায় বলেন, সুদীপ আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তোয়ালে দিয়ে ফাঁস নিয়েছে সে। তার দুই পায়ে রশি দিয়ে বাঁধার দাগ রয়েছে। তার পিঠে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমি ভাগ্নে হত্যার বিচার চাই।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বলা যাবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা।