খুলনার পাইকগাছায় কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় তিন হাজার মৎস্য ঘের, হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, আমনের বীজতলা, সবজি ক্ষেত ও নার্সারি। জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
উপজেলার কপিলমুনি, গদাইপুর, হরিঢালী ও রাড়ুলী ইউনিয়নের অনেক উঁচু এলাকাও এবার পানিতে ডুবে গেছে। পৌরসভার সোনা পট্টি, মাছ বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুরবস্থাই জলাবদ্ধতা আরও প্রকট করেছে। অনেক জায়গায় ব্যক্তি উদ্যোগে ড্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় পানি বের হতে পারছে না। পৌর এলাকা ও বিভিন্ন ইউনিয়নে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ভরাট হয়ে গেছে দীর্ঘদিন আগেই।
কপিলমুনি, গোলাবাটি, সলুয়া, নতুন বাজার ও জিরো পয়েন্ট এলাকার সড়ক ভেঙে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব পথে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও পথচারীরা। অনেক ঘরবাড়ির উঠানেও পানি ঢুকে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একরামুল হোসেন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে আমন ধানের বীজতলা ও সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে পানি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নেমে গেলে চারা রক্ষা করা সম্ভব হবে।’
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক বলেন, ‘পাইকগাছায় প্রায় এক হাজার পুকুর ও তিন হাজার মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন বলেন, ‘নদীর স্লুইস গেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং ড্রেন পরিষ্কারে একটি টিম কাজ করছে। সমস্যা নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’
স্থানীয়দের আশঙ্কা, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে দুর্যোগ আরও বাড়তে পারে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ভোগ নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে উঠবে।
আপনার মতামত লিখুন :