কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা খাইরুল মোল্লার বিরুদ্ধে বাসাভাড়া না দিয়ে জোরপূর্বক দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে খাইরুল মোল্লা পলাতক থাকলেও তার পরিবারের সদস্যরা ওই বাসায় ভাড়াটিয়া পরিচয়ে বসবাস করছেন।
এ বিষয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বাড়ির মালিক রিমা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে রিমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি শহরের নীলগঞ্জ উকিলপাড়া এলাকায় আব্দুর রহিম মোল্লার স্ত্রী শেলোরা মোল্লার কাছ থেকে তার প্রবাসী স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা দিয়ে সাফ কবলা ভিত্তিতে তিনতলা বিশিষ্ট বাড়িটি ক্রয় করেন। তবে এর আগেই তারা বায়না ভিত্তিতে মালিকানা হিসেবে দখলে ছিলেন। জমি রেজিস্ট্রির পর রিমা আক্তার চারটি পরিবারকে বাসাটি ভাড়া দেন।
পূর্বের মালিক শেলোরা মোল্লা থাকার সময় তার স্বামীর ভাই আঃ করিম মোল্লা ও ভাতিজা খাইরুল মোল্লা নিচতলায় পরিবার নিয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন। শুরুতে তাদের বাসা ছাড়তে বললেও শেলোরা মোল্লার অনুরোধে তাদের থাকতে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বাসা বিক্রির পর থেকে তারা কোনো ভাড়া না দিয়ে জোরপূর্বক দখল করে বসবাস করছেন।
রিমা আক্তার বলেন, ‘ভাড়ার দাবি জানালে খাইরুল মোল্লার পরিবারের সদস্যরা হুমকি দেন এবং বলেন, বাসা ছাড়বেন না। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে আমি বাবার বাড়িতে বসবাস করছি।’
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালে বাসার দখল-সংক্রান্ত বিষয়ে আঃ করিম মোল্লা বাদী হয়ে শেলোরা মোল্লা গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। কিন্তু কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকায় আদালত গত ২১ জুলাই মামলাটি খারিজ করে দেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়, শেলোরা মোল্লা সায়িদ আহাম্মদের কাছ থেকে সাফ কবলা ভিত্তিতে ৮ শতাংশ জমি কিনে তাতে তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন। আ. করিম মোল্লা কীভাবে ওই ভবনে দখলপ্রাপ্ত হয়েছেন, তা তিনি মামলার আরজিতে উল্লেখ করেননি। যদি তিনি ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে থাকেন, তাহলে তিনি মালিকের মালিকানা অস্বীকার করতে পারেন না। এমনকি দীর্ঘ সময় দখলে থাকলেও আইন অনুযায়ী কোনো স্বত্ব প্রতিষ্ঠা হয় না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খাইরুল মোল্লাকে পাওয়া না গেলেও তার বাবা আ. করিম মোল্লা মুঠোফোনে বলেন, ‘এইটা আমার বাসা, আমি দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করছি।’ এরপর তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।’
সংবাদ সম্মেলনে রিমা আক্তারের শিশু কন্যা স্নেহা, সারা, ভাবি স্বপ্না আক্তার, ভাগনি মাইশা আক্তার এবং বড় ভাই শাহীন উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :