উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা অতিবৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি গত কয়েকদিন ধরে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। তবে বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এর ফলে বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ‘বুধবার সকাল ৬টার দিকে ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি ছিল বিপৎসীমার ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। এরপর সকাল ৯টার দিকে তা কমে ৫২ দশমিক ৭ সেন্টিমিটারে নেমে আসে, যা বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, ‘রাত থেকেই পানি কমতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও উজানে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।’
এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ সময় নদীপাড়ের মানুষ আতঙ্কে রাত কাটান।
এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী এলাকায় রাতে একটি বাঁধ ভেঙে যায়, ফলে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। তবে বুধবার সকাল থেকে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি কমতে শুরু করেছে।
গড্ডিমারী ইউনিয়নের কৃষক শামসুল আলম জানান, ‘আমার কিছু আমন ধানের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন পানি কিছুটা কমলেও নতুন করে বৃষ্টি হলে আবারও ক্ষতির আশঙ্কা আছে।’
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘তিস্তার পানিতে প্রতি বছরই ক্ষতির মুখে পড়ি। আমরা চাই দ্রুত ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন হোক। এটিই আমাদের একমাত্র দাবি।’
ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘তিস্তার পানি এখন বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। বড় ধরনের ঝুঁকি আপাতত নেই, তবে সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে।’
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (বাপাউবো) জানিয়েছে, বর্তমানে তিস্তার পানি কমছে। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভারি বৃষ্টিপাত হলে নদীর পানি আবার বাড়তে পারে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘নদী তীরবর্তী এলাকার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবার ও ঢেউটিন মজুত রয়েছে। বন্যা হলে তা সামাল দিতে প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :