ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১৭ তরুণ-তরুণী

কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন ১৭ তরুণ-তরুণী। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

চাকরির নিয়োগ মানেই ঘুষ, দালাল আর সুপারিশ-এমন দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণা ভেঙে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তরিকুল ইসলাম। মাত্র ১২০ টাকার সরকারি ফি জমা দিয়েই বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেয়েছেন ১৭ তরুণ-তরুণী।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় লালমনিরহাট পুলিশ লাইন্সের ড্রিল সেডে এক আবেগঘন পরিবেশে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তখন নির্বাচিত প্রার্থীরা আনন্দাশ্রুতে ভিজে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় অনেকের চোখে নেমে আসে কান্না, তবে সেই কান্নার ভেতরেও ফুটে ওঠে পরম আনন্দ।

এসপি তরিকুল ইসলাম জানান, এবার কনস্টেবল পদে ১ হাজার ৮৪৪ জন প্রার্থী অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। লিখিত পরীক্ষার পর ৪৬ জন উত্তীর্ণ হন। সেখান থেকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন ১৫ জন ছেলে ও ২ জন মেয়ে-মোট ১৭ জন। এছাড়া আরও তিনজন অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন।

তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, এই নিয়োগে কোনো ধরনের উৎকোচ বা সুপারিশের স্থান ছিল না। সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মাত্র ১২০ টাকায় সরকারি চাকরি পাওয়া এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তব।

চাকরি পাওয়া এক তরুণ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, আমরা কখনো ভাবিনি এত সহজে চাকরি পাওয়া সম্ভব। মনে হচ্ছে বুক থেকে বড় বোঝা নেমে গেছে। এখন শুধু দেশের জন্য কাজ করতে চাই।

একজন অভিভাবক চোখ মুছতে মুছতে বলেন, সারা জীবন শুনেছি সরকারি চাকরি পেতে লাখ লাখ টাকা লাগে। আজ নিজের সন্তানের জন্য বিনা উৎকোচে চাকরি পেয়ে মনে হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ দেখছি।

প্রার্থীদের উদ্দেশে এসপি তরিকুল ইসলাম আরও বলেন, চাকরি পাওয়ার পর প্রতারক চক্র হয়তো প্রলোভন দেখাবে যে তারা চাকরি পাইয়ে দিয়েছে। কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। এমন ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন, আমরা প্রতারকদের জেলে পাঠাব।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. জয়নাল আবেদীন, পিপিএম-সেবা পদকপ্রাপ্ত মো. ইলিয়াছ হোসেন, জেলা ডিবি ওসি সাদ আহম্মেদসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।