মাদারীপুরের শিবচরে পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যা মামলার আসামি রাকিব মাদবরকে (২৩) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ লোকজনের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে শিবচর বাজারের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) শাখার এটিএম বুথের সামনে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
নিহত রাকিব মাদবর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের পূর্ব কাকইর গ্রামের নাসির মাদবরের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় রাকিব শিবচর বাজারে অবস্থান করছিলেন। হঠাৎ করে একদল দুর্বৃত্ত চাইনিজ কুড়াল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাকিব মাদবরের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা রাকিবকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় রাকিবকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ঢাকা নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর শিবচর বাজার এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাজারের দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা হতবাক হয়ে পড়েছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে শিবচরে ব্যবসা করছি, এমন নৃশংস ঘটনা কখনো দেখিনি। মানুষের চোখের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা ভয়াবহ ঘটনা।
ঘটনার খবর পেয়ে শিবচর থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে।
শিবচর থানার ওসি রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যাই। স্থানীয়রা রাকিবকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। পরে আমরা নিশ্চিত হই যে, ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মরদেহ এখনো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। মরদেহ পেলে আমরা আইনি প্রক্রিয়া শুরু করব এবং হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত রাকিব মাদবরের সঙ্গে প্রতিপক্ষের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। পূর্বের একটি হত্যাকাণ্ডে রাকিব আসামি ছিলেন। সে বিরোধ থেকেই প্রতিপক্ষ প্রকাশ্যে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
এ ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। এদিকে, শিবচর বাজার ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ওসি রকিবুল ইসলাম আরও জানান, এটি একটি পরিকল্পিত ‘হত্যাকাণ্ড’। আমরা তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার মূল কারণ উদ্ঘাটন করব এবং জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনব।