বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সদস্যসচিব আল নূর মো. আয়াসকে (২৫) দুর্বৃত্তদের মারধর ও ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন। পরে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি শঙ্কামুক্ত।
সোমবার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত আল নূর মো. আয়াস জেলার তারাকান্দা উপজেলার কামারগাঁও ইউনিয়নের গোবিন্দখিলা গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে।
জানা গেছে, সোমবার সকালে নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ থেকে এক স্বজনকে দেখে ময়মনসিংহ নগরে ফিরছিলেন আল নূর। এ সময় নগরের পাটগুদাম ব্রিজ এলাকায় যানজটের কারণে বাস থেকে ব্রিজ মোড়ে নেমে পড়েন। এ সময় মোবাইলে কথা বলার সময় দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়।
আল নূর মো. আয়াস বলেন, ‘বাস থেকে নামার পর মুঠোফোনে কল আসায় ব্রিজ মোড়ে দাঁড়িয়ে কথা বলতে থাকি। ওই অবস্থায় ৫-৬ যুবক আসে, তাদের কাউকে আমি চিনি না। আমাকে ছুরি ঠেকিয়ে নিচের দিকে যেতে বলে। সে এলাকাটিতে ‘জয় বাংলা চত্বর’ ছিল। তাদের হাতে ছুরি আর আমার সঙ্গে কেউ ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘নিচে নিয়ে যাওয়ার পর তারা বলতে থাকে, ‘তুই বেশি বাড়াবাড়ি করতাছস। তোদের একেকটাকে ধইরা পিটাইয়া শেষ করে দিব। ব্রিজ মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তুই ভেঙেছিস। তোকে আজকে মেরেই ফেলব, একটাকেও রাখব না। তুই অনেক কিছু করেছিস, অনেক ক্ষতি করেছিস আমাদের’। এ ছাড়াও বিভিন্ন রকম কথা বলতে থাকে তারা।
আল নূর দাবি করেন, ‘দুর্বৃত্তরা তাকে বলতে থাকে- ‘তুই আওয়ামী লীগকে থ্রেড দিস।’ এগুলো বলার পর আমার শরীরে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। যখন দেখি ছুরি দিয়ে আঘাত করবে তখন দুজনকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে হাতে ও পায়ে ছুরিকাঘাত করে। যাওয়ার সময় তারা বলে, যেখানেই পাবে সেখানেই পিটাব। তোদের মেরে ফেলবই আমরা, তোদের অস্তিত্ব রাখব না। তোদের জন্য আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।’
স্থানীয়রা নূরকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে হাসপাতালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন তিনি।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শহীদুর রহমান বলেন, ‘আয়াসের পায়ে ছুরিকাঘাত আছে। দেহের নানা স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে সে শঙ্কামুক্ত।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কারা কী কারণে হামলা করেছে তা বলা যাচ্ছে না। আহত ছাত্রনেতাও হামলার কারণ সম্পর্কে বলতে পারছে না। আমরা জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি।’
আপনার মতামত লিখুন :