ময়মনসিংহে ফেসবুকে টু–লেট বিজ্ঞাপন দেখে বাসা দেখতে গিয়েছিলেন নাজমুল হাসান (নাঈম) নামে এক শিক্ষার্থী। এরপরই ঘটে বিপত্তি। বাসার কক্ষে ঢুকার পর ওই শিক্ষার্থীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারধর করে মুঠোফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় দুই তরুণীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দুই তরুণীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন কলেজছাত্র নাঈম। পরে রাতেই সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী নাজমুল হাসান (নাঈম) ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ভূরারবাড়ী গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাদিয়া জাহান ওরফে মেঘলা (২১) ও ফারিয়া আক্তার ওরফে পায়েল (১৯)। তাদের দুজনেরই বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়। সাদিয়া জাহান ময়মনসিংহ কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে ফারিয়া আক্তার সহিলাটি মুক্তিযোদ্ধা কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নাজমুল হাসান দুই তরুণীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পরে সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার নগরীর গুলকিবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকেলে আদালতের নির্দেশে দুই তরুণীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাস ধরে নতুন বাসা খুঁজছিলেন নাজমুল। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুকে “টু-লেট ময়মনসিংহ” গ্রুপে সাবলেটের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পান। বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে ফোন করলে জানানো হয়, দুই কক্ষের একটি বাসার এক কক্ষ ভাড়া দেওয়া হবে। সে সময় তিনি বিকল ল্যাপটপ মেরামত করতে গাঙ্গীনারপাড় যাচ্ছিলেন, সেখান থেকে বাসাটি দেখতে যান।
নাজমুল বলেন, ‘গুলকিবাড়ি এলাকার ফখরুজ্জামান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় আমাকে নিয়ে কক্ষটি দেখানো হয়। এরপর হঠাৎ চারজন নারী ও চারজন যুবক ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমাকে মারধর করে। তারা আমাকে অভিযুক্ত করে জবানবন্দি লিখিয়ে নেয়। এরপর আমার আইফোন, ল্যাপটপ ও সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। পরে এটিএম বুথ থেকে জোরপূর্বক আরও ২০ হাজার টাকা তুলিয়ে দেয় এবং হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়।’
পুলিশ জানায়, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে চক্রের দুই নারী সদস্যকে আটক করা হয়। তাদের জিম্মা থেকে নাজমুলের আইফোন ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের আরও চারজন তরুণী ও চারজন যুবকের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তারা সবাই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘চক্রের অন্য সদস্যদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। আটক দুজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’