বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ক্যান্সার রোগীরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে রেডিওথেরাপির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রায় ১০ বছর ধরে রেডিওথেরাপি মেশিনটি (কোবাল্ট-৬০) বিকল হয়ে আছে। ফলে চিকিৎসকরা বাধ্য হয়ে রোগীদের ঢাকায় পাঠাচ্ছেন।
তবে অর্থাভাবে অনেক রোগী সেই সুযোগও নিতে পারছেন না। দীর্ঘদিন ধরে মেশিন নষ্ট থাকলেও জনপ্রতিনিধি বা নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেডিওথেরাপি মেশিনটি স্থাপন করা হয়। এটি নষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ৩০–৩৫ জন রোগী রেডিওথেরাপি নিতে পারতেন। ২০১৫ সালে মেশিনটি বিকল হয়ে গেলে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে রেডিওথেরাপির সিরিয়াল পেতে অনেক সময় লাগে। তাই অনেক রোগী বাধ্য হয়ে উচ্চমূল্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন।
হাসপাতালে মাকে চিকিৎসা দিতে আসা সুলতানা জাহান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এক মাস ধরে আমরা চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন রেডিওথেরাপির জন্য ডাক্তাররা ঢাকায় যেতে বলেছেন। আমরা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার, তাই খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
হালুয়াঘাটের ক্যান্সার রোগী গোপাল চন্দ্র দত্ত, যিনি পেশায় দর্জি, জানান, গ্রামবাসীর সহায়তা ও নিজের সঞ্চয় দিয়ে ঢাকায় গিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রেডিওথেরাপি নিয়েছেন। এতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়ে তিনি এখন নিঃস্ব।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম পাঠান বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে রেডিওথেরাপি বন্ধ। বাধ্য হয়ে আমরা রোগীদের ঢাকায় পাঠাই। এখানে যদি সুবিধাটি চালু থাকত, রোগীরা অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে চিকিৎসা নিতে পারতেন।’
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন জানান, তারা নিয়মিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করছেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন ক্যান্সার ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হলে সেখানে আধুনিক রেডিওথেরাপি মেশিন স্থাপন করা হবে। তবে সেটি চালু হতে আরও দুই-তিন বছর সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’