ঢাকা শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫

প্রাথমিক বৃত্তির মডেল টেস্টে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থী, ‘আনোয়ার মাস্টার’-এর নতুন কাণ্ড!

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম
ভাইরাল শিক্ষকের প্ররোচণায় প্রাথমিক বৃত্তির মডেল টেস্টে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থী

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বৃত্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক মডেল টেস্টে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভূটিয়ারকোনা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদকে প্রকাশ্যে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে কলেজ থেকে বের করে দিয়ে দেশজুড়ে আলোচিত ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল সেই ‘আনোয়ার হোসেন মাস্টার’-এর আরেক কাণ্ড!

বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভূটিয়ারকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৪টি বিদ্যালয়ের ৯২ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। এর মধ্যে উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের চল্লিশা কড়েহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনের রয়েছে ভূটিয়ারকোনা বাজার এলাকায় মিডিয়া প্রি-ক্যাডেট স্কুল। আটজন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচ পরীক্ষার্থী হলো এ কিন্ডারগার্টেনের।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, এ শিক্ষার্থীরা চল্লিশা কড়েহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। তবে তারা ক্লাসে অনিয়মিত।

বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এরিয়া (একটি নির্দিষ্ট এলাকাকে বোঝায়) থেকেও প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার দূর থেকে এ শিক্ষার্থীদের এ বিদ্যালয়ে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে থেকে তারা লেখাপড়া করছে।

অপরদিকে ভূটিয়ারকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার পর শিক্ষার্থী স্বতঃপ্রণোদিতভাবেই নিজেদের নাম, ঠিকানা ও পরিচয় প্রকাশ করে। এতে ওই শিক্ষার্থীরা যে চল্লিশা কড়েহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত বা অনিয়মত কোনো শিক্ষার্থী নয় সেটাও নিশ্চিত হয় ভূটিয়ারকোনা স্কুলে একই সারিতে বসা শিক্ষার্থীরা।

তারা এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়, তারা হলো মাওহা ইউনিয়নের শহর আমুদপুর গ্রামের সেকান্দর আলীর পুত্র বায়েজিদ আল হাবিব, আতিকুর রহমানের কন্যা আতিকা জাহান জুঁই, বীর আহাম্মদপুর গ্রামের আল আমিনের পুত্র তানজিদ হাসান, বিষমপুর গ্রামের কবীর উদ্দিনের পুত্র ইসতিয়াক আহমেদ ঝুমন, লংক্ষাখোলা গ্রামের নাজিমুল হকের কন্যা নূসরাত জাহান মাসতুরা।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সঞ্জয় কুমার বণিক জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারি বিদ্যালয়ে যাতে কোনোভাবেই বেসরকারি বা কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারে, সে বিষয়ে আগেই সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে এ শিক্ষার্থীরা ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আর সুযোগ নেই।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, এবছর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই শুধু সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।