ময়মনসিংহের নান্দাইলে মহাসড়কের ওপর তিন গরুর হাট। মহাসড়কের বড় একটি অংশ দখল করে অবৈধভাবে এসব বাজার গড়ে উঠেছে। এতে বাড়ছে যানজট, ভোগান্তি ও সড়ক দুর্ঘটনা।
সুত্র জানায়, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল সড়কের বড় একটি অংশ দখল করে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে মুসুল্লী ইউনিয়নের মেরেঙ্গা গরুর বাজার, চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্ৰাম চৌরাস্তা গরুর বাজার এবং কিশোরগঞ্জ-কেন্দুয়া সড়কের বাশাটি গরুর বাজার।
এসব বাজারের কারণে যানজট, ভোগান্তি আর দুর্ঘটনা নিত্যদিনের। বাজারের কারণে গুরুত্বপূর্ণ ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহসড়কে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ভ্রাম্যমাণ দোকান, যত্রতত্র পার্কিং এবং হাট-বাজার কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থপনার কারণে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ, সড়কে ঝরছে প্রাণ।
ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ সড়কের বারুইগ্ৰাম চৌরাস্তা বাজারের নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে মহাসড়কের ওপরই গরুর বাজার বসে। একই সাথে বারুইগ্ৰাম চৌরাস্তা বাজারের ইজারা ডাক নিয়েও আছে ধূম্রজাল। জনশ্রুতি আছে, সর্বোচ্চ ডাক দেওয়াকে ইজারার দায়িত্ব না দিয়ে কৌশলে সর্বনিম্ন ডাক দেওয়াকে ইজারার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জনবহুল এলাকাগুলোতে সড়কের পাশ ঘেঁষে কিংবা সরাসরি সড়কের ওপরই গড়ে উঠেছে কাঁচাবাজার, ফল ও রকমারি পণ্যের দোকান। এসব বাজারের কারণে সড়কের মূল অংশ সংকুচিত হয়ে গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং এবং পথচারীদের অসতর্ক চলাচল দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে। বিশেষ করে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে যখন হাট বসে, তখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়ে জরুরি সেবার যানবাহন আটকা পড়ে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ পথচারী, সবাই চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন।
এই মহাসড়কে নিয়মিত চলাচল করা বাস ও সিএনজির কয়েকজন চালক বলেন, সড়কের ওপর বাজার বসার কারণে গাড়ি চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। হঠাৎ করেই সামনে মানুষ চলে আসে, সড়কের ওপর যাতে কোনোভাবেই বাজার বসতে না পারে, সে বিষয়ে প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি এবং আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনাসহ গরুর বাজার উচ্ছেদের আদেশ জারি করলেও তা অজ্ঞাত কারণে বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা জান্নাত বলেন, মহাসড়কের ওপর যত্রতত্র হাট-বাজার বসানো এবং গাড়ি পার্কিংয়ের ফলে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও দুর্ঘটনা ঘটছে। মহাসড়ক আইনে এসব বাজার বা স্থাপনা সম্পূর্ণ অবৈধ। এসব বাজারের কারণে নিরাপদ মহাসড়ক গড়ার উদ্যোগ সফল হচ্ছে না। সড়ক ও জনপথের জায়গা থেকে বাজার উচ্ছেদের কাজ উপজেলা প্রশাসনের নয়। তাছাড়া আমি এখানে সদ্য যোগদান করেছি। বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে দেখব।
তিনটি বাজারই নান্দাইল উপজেলায় এবং কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের অধীনে।
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, চৌরাস্তা বাজারে গরুর হাট উচ্ছেদের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছিল। পরে জেলা প্রশাসন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদলি হওয়ার কারণে উচ্ছেদ অভিযান পিছিয়ে পড়ে। যে কারণে আবারও উচ্ছেদের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ হলে অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। অপর দুটি বাজারের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন